Site icon suprovatsatkhira.com

সাতক্ষীরা-৩: দেবহাটায় পর্যটন খাত ও আশাশুনিতে রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন করবো

আসাদুল ইসলাম:
সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনসুর আহমেদ। ১৯৬৬ সালের ৬ দফা অন্দোলনের মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ছিলেন সাতক্ষীরা কলেজ ছাত্রলীগের কমান রুম সম্পাদক। অংশ নিয়েছেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। ১৯৭২ সালে পারুলিয়া ইউনিয়ন রিলিফ কমিটির চেয়ারম্যান মনোনীত হন। ১৯৭৩ সাল থেকে পরপর চার মেয়াদে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার প্রতিবাদ করায় তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালায় সামরিক জিয়া সরকার। ১৯৮০ সাল থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর মধ্যে ১৯৮৬ সালে ও ১৯৯১ সালে দেবহাটা-কালিগঞ্জ (তৎকালীন) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৮ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ২০১৫ সালে সরাসরি সম্মেলনের মধ্য দিয়ে সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। পাশাপাশি ২০১১ সালের ২০ ডিসেম্বর থেকে ২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত পালন করেন সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের প্রশাসকের দায়িত্বও।
জেলা আওয়ামী লীগের প্রবীণ এই নেতা আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী।
নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তি প্রসঙ্গে দৈনিক সুপ্রভাত সাতক্ষীরাকে তিনি বলেন, রাজনৈতিক জীবনে আমি কখনো পথভ্রষ্ট হয়নি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বাধীনতার চেতনা ধারণ করে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় আছি। দলের সঙ্গে কখনো বেঈমানী করিনি। দলের ভাল-খারপ উভয় সময়ে দলের সাথে থেকেছি। নেতা-কর্মীদের সাথে থেকেছি। দলের জন্য জেল-জুলুম সহ্য করেছি। আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীকে পরিবারের সদস্য মনে করে এগিয়ে চলেছি। ২০১৩ সালে সাতক্ষীরাতে যে সহিংসতা হয়েছিলো, যেখানে দলের ১৬ জন নেতা-কর্মীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়, সে সময় দলের ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগসহ সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীকে সাথে নিয়ে সহিংসতা মোকাবেলার চেষ্টা করেছি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতকে প্রতিরোধ করে দলীয় প্রার্থীকে জিতিয়ে আনতে সাহসী নেতৃত্ব দিয়েছি। এছাড়া জামায়াত অধ্যুষিত সাতক্ষীরাতে দলকে বলিষ্ঠ নেতৃত্ব দিয়ে আজকের এই অবস্থায় এনেছি। আজ দলীয় একাধিক প্রার্থী হওয়াই তার প্রমাণ। নিশ্চয়ই দল আমার উপর আস্থা রাখবে।
দলীয় একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হচ্ছে- এমন প্রসঙ্গে মুনসুর আহমেদ বলেন, অনেকেই মনোনয়ন প্রত্যাশী। এটা দলের জন্য পজেটিভ। কারণ এতে বুঝতে হবে দলের অনেক যোগ্য নেতা তৈরী হয়েছে। তবে এর জন্য মতবিরোধ হয়েছে বা হবে বা দূরত্ব তৈরী হবে- এ বিষয়ে আমি একমত না। কারণ আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ দল। এর সাংগঠনিক অবস্থা অনেক মজবুত। ফলে অনেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হতে পারে, তার জন্য দলে কোন প্রভাব পড়বে না। দলীয় সভানেত্রী যাকে মনোনয়ন দেবেন, যার হাতে নৌকার টিকিট থাকবে আমরা দলের সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে তার পক্ষে কাজ করবো। সবাই এক সাথে কাজ করে তাকে বিজয়ী করবো। ঐক্যবদ্ধভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনকে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী করবো। কারণ বঙ্গবন্ধুর ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলা নির্মাণে আমরা অতীতে ঐক্যবদ্ধ ছিলাম ভবিষ্যতেও থাকবো।
দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হলে কোন কাজগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এলাকার মানুষের জন্য অনেক কাজই করতে হবে। তারমধ্যে প্রধান হলো- সাতক্ষীরা থেকে ঘোলা-আশাশুনি রাস্তাটি পুনর্নির্মাণ ও সংস্কারে উদ্যোগ গ্রহণ করবো। একই সাথে এলাকার সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য রাস্তা, কালভার্ট, ব্রিজ নির্মাণের চেষ্টা করবো। আশাশুনির মানিকখালী ব্রিজের কাজ দ্রুত শেষ করতে পদক্ষেপ নেব। সাতক্ষীরা থেকে জঙ্গীবাদ উৎখাত হয়েছে, তবে এখনো পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। এটার বিরুদ্ধে কঠোরভাবে কাজ করে মাদক ও জঙ্গীবাদ বিনাশ করবো।
তিনি বলেন, সাতক্ষীরার পর্যটন নিয়ে কাজ করে এই খাতের বিকাশ ঘটাতে উদ্যোগ নেব। দেবহাটার মিনি সুন্দরবন ও বনবিবি’র বটতলার উন্নয়ন সর্বোপরি জেলার পর্যটন খাতে উন্নয়ন করে বেকারত্ব দূর করতে কাজ করবো।
বর্তমানে কোন সমস্যাটির জন্য এলাকার মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সাতক্ষীরায় চিংড়ি চাষের সুনাম দেশ-বিদেশজুড়ে। অথচ এই খাতের দিকে কেউ নজর দেয় না। চিংড়ি চাষীরা দুর্ভোগে আছে। তাদের জন্য কাজ করতে হবে। এছাড়া সাতক্ষীরা উপকূলীয় এলাকা, এখানকার নদ-নদীগুলোর বেড়িবাধ অনেক পুরাতন, ফলে প্রতিনিয়ত ভাঙনের শিকার হয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ বিপদের মুখে পড়ছে। আমার নির্বাচনী এলাকা আশাশুনি এবং দেবহাটায় খোলপেটুয়া ও ইছামতি নদী তার প্রমাণ। আমি চাই নির্বাচিত হয়ে এই সব নদ-নদীর বেড়িবাধ পুনরায় নির্মাণ করতে, যাতে মানুষের দুর্ভোগ লাঘব হয়।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version