Site icon suprovatsatkhira.com

সাতক্ষীরা-৪: উন্নয়নের প্রথম শর্ত যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটাবো

এসএম নাহিদ হাসান:
মাসুদা খানম মেধা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে ১৯৯৬ সালে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে হাতেখড়ি তার। ছিলেন রোকেয়া হল ছাত্রলীগের সভাপতি ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের কার্যকরী সদস্য। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় গোপালগঞ্জের মেয়ে ও সাতক্ষীরার শ্যামনগরের পুত্রবধূ মেধা আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেতে প্রচারণা চালাচ্ছেন। সাতক্ষীরা-৪ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী মাসুদা খানম মেধা কথা বলেছেন দৈনিক সুপ্রভাত সাতক্ষীরা’র সাথে।
নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজনীতির পাশাপাশি আমি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সংগঠন, ৭১ এর শাণিত কণ্ঠস্বর গৌরব-৭১ এর উপদেষ্টা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব সাতক্ষীরা (ডুসাস) কর্তৃক ২০১৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া সাতক্ষীরার সকল নবীন শিক্ষার্থীর মাঝে জাতির জনকের রাজনৈতিক দর্শন ও সংগ্রামী জীবন সম্পর্কে জানতে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বিতরণ করি। তাছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে শ্যামনগরের আবু জাফর সরদার ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে শ্যামনগরের ২০টি এবং কালিগঞ্জের ৮টি ইউনিয়নের শিক্ষার্থীদের নিয়ে সর্বপ্রথম বঙ্গবন্ধুকে জানো শীর্ষক অনুষ্ঠানের আয়োজন করি এবং বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে রচনা প্রতিযোগিতা এবং বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বিতরণ করি। শীতের সময় জাগো যুব ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে এবং আমার নিজ গৃহে সকল ইউনিয়নের দুস্থদের মাঝে কম্বল বিতরণ করেছি। বিভিন্ন এতিমখানায় সহযোগিতা করেছি। শ্যামনগর এবং কালিগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে ইফতার মাহফিল করেছি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছড়িয়ে দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।
আমি রোকেয়া হলের সভাপতি থাকাকালীন ২০০১ সালের নির্বাচনের দিন বিকাল থেকেই হলের সবাই নিজ নিজ সুবিধাজনক স্থানে চলে যেতে থাকে, কিন্তু আমি হল ছাড়িনি। বঙ্গবন্ধু তো পালিয়ে যাননি, এই কথাটা মাথায় রেখে আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে হলে অবস্থান করেছিলাম। পরের দিন সকালে শত-শত সাংবাদিকদের সামনে তৎকালীন শিবির-ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা আমাকে লাঞ্ছিত করে এবং প্রাণে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করে। এটা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ সকলেই জানেন। এছাড়া এলাকায় স্থানীয়ভাবে নিয়মিত গণসংযোগ করে যাচ্ছি।
সাতক্ষীরা-৪ আসনে আওয়ামী লীগে বেশ কয়েকজন মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন- এটাকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীদের মধ্যে দূরত্ব বা মতবিরোধ তৈরি হয়েছে- এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী একটি সর্ব বৃহৎ রাজনৈতিক দল। জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এখানে অনেক মনোনয়ন প্রত্যাশী থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে দেশরতœ শেখ হাসিনা যদি সাতক্ষীরা-৪ আসনে আমাকে মনোনয়ন দেন তবে আমি সকল নেতা-কর্মীকে একই প্লাটফর্মে, একই কাতারে নিয়ে আসতে পারবো। একই সাথে তাদেরকে সাথে নিয়ে দেশরতœ শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে এ আসন থেকে নৌকাকে বিজয়ী করে জননেত্রীকে উপহার দেবো। কারণ অনেকের সাথে অনেকের মত বিরোধ থাকতে পারে, কিন্তু আমার সাথে কারো কোন বিরোধ নেই, তিক্ততা নেই। আমি গোপালগঞ্জের সন্তান বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়েই বেড়ে উঠেছি। কারো সাথে খারাপ সম্পর্ক নয়, সুসম্পর্ক কিভাবে বজায় রাখতে হয় আমি জানি। সবার সাথে আমার ভালো সম্পর্ক। ইতোমধ্যে আমি সকল মনোনয়ন প্রত্যাশীর সাথে দেখা করেছি, কথা বলেছি। আমি মনোনয়ন পেলে তারা আমাকে সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করলে এলাকার জন্য অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কোন কাজগুলো আগে করতে চান- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমি মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হলে প্রথমেই সাতক্ষীরার যোগাযোগ ব্যবস্থা তথা প্রধান সড়কের মানোন্নয়ন করবো। কারণ একটি এলাকার উন্নয়নের প্রথম শর্ত হলো যোগাযোগ ব্যবস্থা। তাই আমি মনে করি আমার এলাকার উন্নয়নের জন্য প্রথম এ কাজটি গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া নাভারণ-মুন্সিগঞ্জ রেললাইন স্থাপন কার্যক্রম বাস্তবে রূপ দেবো, সাতক্ষীরার সম্ভবনাময় শিল্প হলো পর্যটন শিল্প। এ শিল্পের যদি বিকাশ ঘটানো যায় তাহলে একদিকে যেমন শ্যামনগর তথা সাতক্ষীরার উন্নয়ন ঘটবে তেমনি আমার এলাকার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। তাই আমি সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন করতে চাই। পাশাপাশি ছোট-বড় শিল্প কারখানা স্থাপনের মাধ্যমে এলাকার পিছিয়ে পড়া নারীদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে চাই। তথ্য-প্রযুক্তিতে সাতক্ষীরাকে আরও শক্তিশালী ও জ্ঞান সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে আইটি ফার্ম গড়ে তুলবো। শ্যামনগর আইলা দুর্গত এলাকা হওয়ার কারণে এখানকার মানুষ সুপেয় পানির হাহাকারে দুর্বিসহ জীবন কাটায়। আমি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে জেলা পরিষদের পুকুরগুলো খনন করে পাড় উঁচু করে দিয়ে পিএসএফ বসাবো। বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জন্য বড় বড় জলাধার নির্মাণে উদ্যোগ নেব। পানির জন্য রিভার্স অসমোসিস সিস্টেম করে দেবো। তাছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে শয্যা সংখ্যা উন্নীত করবো এবং আইলা দুর্গত ইউনিয়নে নতুন হাসপাতাল নির্মাণ করবো। যুব সমাজকে মাদকের করাল গ্রাস থেকে রক্ষা করে খেলাধূলায় ফেরাতে স্টেডিয়াম তৈরি করবো।
নির্বাচনী এলাকার মানুষ বর্তমানে কোন সমস্যার কারণে সবচেয়ে দুর্ভোগে আছে- এমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশরতœ শেখ হাসিনার দুই মেয়াদে সমগ্র বাংলাদেশে উন্নয়নের সুবাতাস বয়ে গেলেও এই আসনের অধিকাংশ ইউনিয়ন এখনো অবহেলিত রয়ে গেছে। তারা এখন পর্যন্ত কাঁচা রাস্তা ব্যবহার করে, নদী পার হয়ে চলাচল করে। অনেক এলাকায় এখনো বিদ্যুতের আলো পৌঁছাইনি। তো আমি যখন আমার এলাকায় নির্বাচনী কাজে বের হই, তখন আমার এলাকার জনসাধারণ একটা কথাই সবসময় বলেন, আপনি যেহেতু গোপালগঞ্জের মেয়ে এবং আপনি যদি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তাহলে শেখ হাসিনা অবশ্যই আমাদের প্রতি সুদৃষ্টি দেবেন এবং আপনি দেশরতেœর কাছ থেকে কাজ করে নিয়ে আসতে পারবেন এতটুকু বিশ্বাস আমাদের আছে।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version