Site icon suprovatsatkhira.com

ইছামতিতে প্রতিমা বিসর্জনে ভাসলো আনন্দের ভেলা

মীর খায়ারুল আলম/এমএ মামুন/সাইফুল ইসলাম, দেবহাটা: ভারত-বাংলাদেশ সীমানা জুড়ে বয়ে চলা ইছামতি নদীতে দেবী দুর্গার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হয়েছে শারদীয় উৎসব। আর এই উপলক্ষ্যে দু-দেশের মানুষের ভীড়ে মুখরিত হয়ে উঠেছিল ইছামতির দু’পার।
দুই বাংলার মানুষ মিলন মেলায় মেতে উঠতে না পারলেও ইছামতির বুকে নিজ নিজ সীমারেখায় ভাসায় আনন্দের ভেলা। প্রতিবছর দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ও ঐতিহ্যবাহী প্রতিমা বিসর্জনস্থল দেবহাটার ইছামতি নদীতে যাওয়ার অপেক্ষায় থাকে দু’বাংলার মানুষ। দিনটিতে নিরাপত্তার লক্ষ্যে ইছামতি নদীর বিস্তৃত জিরো পয়েন্ট এলাকা জুড়ে নৌযানে টহল জোরদার করে বিজিবি ও বিএসএফ।
শুক্রবার বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভারতের টাকি সীমান্তে এবং বাংলাদেশের টাউনশ্রীপুর এলাকায় জড়ো হতে থাকে হাজার হাজার বাঙালি নারী-পুরুষ। দিনভর অপেক্ষা শেষে দুপুর ৩টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দর্শানার্থীরা নিজ নিজ সীমারেখায় নৌকায় করে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ পায়। এসময় ৩ শতাধিক নৌকা ও ট্রলারে চড়ে আনন্দ উপভোগ করে দু-দেশের মানুষ। নানা রকম বাদ্য বাজনা বাজিয়ে নেচে গেয়ে উপভোগ করে সময়টি।
এবছর বাংলাদেশের তুলনায় ভারতের ট্রলার ও নৌকার সংখ্যা ছিল চোখে পড়ার মত।
এদিকে, এই উৎসবকে আরো প্রাণবন্ত করে তুলতে অনুষ্ঠানে যোগদান করেন, সাতক্ষীরা-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল, পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান, দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাফিজ আল আসাদ, দেবহাটা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ইয়াসিন আলী, দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ মান্নান আলী, জেলা পরিষদের সদস্য আল ফেরদৌস আলফা, দেবহাটা সদর ইউপি চেয়ারম্যান আবু বকর গাজীসহ স্থানীয় সর্বস্তরের মানুষ।
এছাড়া ভারতের টাকিতে উপস্থিত ছিলেন টাকি পৌরসভার মেয়র সোমনাথ চট্টপাধ্যায়, ভারতের মহাকুমা থানার এসডিপিও অশিস মর্জি, সার্কেল ইন্সúেক্টর প্রশেন খান, বিএসএফ ক্যাম্প কমান্ডার প্রেম সিংহ প্রমুখ।
পশ্চিম আকাশে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে ভারতের টাকি সীমান্তে জ্বলে ওঠে অজ¯্র রং বেংরঙ্গের বাতি। আর এই বাতির ঝলকানি পড়ে ইছামতি নদীতে। অন্ধকার কেটে আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠে দুপাড়। কিছু সময় পর ভারতের পাড়ে শুরু হয় আতশ বাজির উৎসব। রাত বাড়ার সাথে সাথে ৮টার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন দিয়ে বাড়ি ফেরে ভক্ত ও দর্শণার্থীরা।
তবে, দু-দেশের আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে ইছামতি নদীতে স্ব স্ব তীরে বিজয়া দশমীর প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হলেও বাড়ি ফেরার পথে সকলের চোখে মুখে ছিল স্বজনদের সাথে দেখা করতে না পারায় হতাশা।
কারণ আগে এই দিনটিতেই দু’দেশে অবস্থানরত স্বজনরা একে অপরের সাথে দেখা করার সুযোগ পেত। আলিঙ্গন করতো একে অপরের সাথে।
এবছর শারদীয় দুর্গাপূজা অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে উৎসবের আমেজে শেষ করতে পারায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version