Site icon suprovatsatkhira.com

সাতক্ষীরায় স্বামীর বাড়িতে শিশু কন্যাকে নিয়ে ময়মনসিংহের মেয়ে সালমার অনশন

ডেস্ক রিপোর্ট: রাতভর মশায় কামড়েছে। শিশুটিরও শুরু হতে পাতলা পায়খানা। এমন অমানবিক অবস্থায় সম্পূর্ণ নিরাপত্তাহীনতায় ফেলে রেখেছে আমাকে। তারপরও রাতে গলা টিপে আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। টেনে হেচড়ে বাইরে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টাও করেছে।
গত ২৪ ঘণ্টা ধরে বিরতিহীন অনশনে থাকা ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার গৃহবধূ সালমা খাতুন এভাবেই তার অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, শ^শুর বাড়ির লোকজন এতো নিষ্ঠুর, এতো নির্মম যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।
এমনকি আমার এই দুঃসময়ে পুলিশ শুধু দেখে গেছে, কিন্তু নিরাপত্তার কোন ব্যবস্থা করেনি, স্বামীর ঘরে উঠতেও সাহায্য করেনি।
ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার মহিষতাড়া গ্রামের শেখ জামাল হোসেনের মেয়ে সালমা খাতুন। তার সাথে বিয়ে হয়েছিল সাতক্ষীরার সুলতানপুরের দুলাল হাসানের ছেলে অমিত হাসান ফহাদের।
তিনি জানান, ২০১২ সালে ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে সে বছরের ১৪ জুলাই তাদের বিয়ে হয় ময়মনসিংহে। এর মধ্যে তাদের ঘরে আসে মেয়ে অবন্তী হাসান ফারিয়া। কিন্তু ২০১৭ সালে স্বামী অমিত হাসান ফহাদ স্ত্রী ও শিশু কন্যাকে ফেলে চলে যায়। এরপর থেকে আর কোন যোগাযোগ নেই, এমনকি কোন খোঁজখবরও নেয় না।
সালমা খাতুন জানান, অনেক চেষ্টার পর অবশেষে তিনি তার কন্যা শিশুকে নিয়ে অমিত হাসানের বাড়িতে ধর্ণা দিয়েছেন সোমবার দুপুর ২টা থেকে রাত পার হয়ে মঙ্গলবার দুপুরে এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত।
সামলা খাতুনের অভিযোগ, তার শ্বাশুড়ি আকলিমা খাতুন রাতে তার গলা টিপে ধরেছেন, হত্যার উদ্দেশ্যে তার উপর নির্যাতন চালানো হয়েছে।
সালমা বলেন, বিয়ের পর তার ও তার স্বামীর কিছুদিনের জন্য জেল হয়। এরপর তারা প্রাপ্ত বয়স্ক হয়ে ওঠায় নিজেদের স্বামী-স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিতে থাকেন। কিন্তু এতে বাধ সাধেন অমিত হাসান ফহাদের মা আকলিমা খাতুন। অবশেষে গত ১২ আগস্ট শ্বাশুড়ি আকলিমা সব মেনে নিয়েছেন বলে তাকে জানান এবং তাকে সুলতানপুরে চলে আসতে বলেন।
সালমা খাতুন জানান, গত ৬ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরায় পৌঁছান। শ্বাশুড়ি আকলিমা তাকে একটি ভাড়া বাসায় রেখে দেন। এরপর কয়েকদিন আগে থেকে তাকে ভাড়া বাসা থেকে তাড়াতে শুরু করেন আকলিমা। নিরুপায় হয়ে তিনি আকলিমাদের বাড়ির দরজায় এসে অনশন শুরু করেছেন।
তিনি জানান, তার কাছে বিয়ের কোন দালিলিক কাগজপত্র নেই। এর সব কিছু রয়েছে স্বামী অমিত হাসান ফহাদ ও ম্যারেজ রেজিস্ট্রারের কাছে।
এখন তিনি দাড়াবেন কোথায়- প্রশ্ন রাখেন সালমা খাতুন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাতক্ষীরা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনির হোসেন জানান, সালমা খাতুনের দায়ের করা মামলায় তার স্বামী অমিত হাসান ফহাদ বর্তমানে জেলে আছেন। ২৪ সেপ্টেম্বর মামলার দিন রয়েছে। মূলত মামলার দিনকে কেন্দ্র করে তাকে তার শ্বাশুড়ি সাতক্ষীরায় এনে বলেছে তুমি মামলা তুলে নাও, অমিত তোমাকে রাখলে আমরা মেনে নেব।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version