কলারোয়া প্রতিনিধি: কলারোয়ায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেয়ার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন সাংবাদিক ইমাদুল হক। হুমকির শিকার ইমাদুল দৈনিক গ্রামের কাগজের গয়ড়া প্রতিনিধি ও উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের মৃত আয়নুদ্দীন গাজীর ছেলে।
বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় কলারোয়া রিপোর্টার্স ক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক ইমাদুল হক তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, উপজেলার বোয়ালিয়া ফকিরপাড়া মোড়ে তার নিজস্ব জমির কিছু অংশ জোরপূর্বক দখল করে পাকা ঘর নির্মাণ করার প্রতিবাদ করায় তাকে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার হুমকি প্রদান করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, স্থানীয় কেড়াগাছি ইউপি সদস্য নজরুল ইসলামের ইন্ধনে বোয়ালিয়া গ্রামের মো. আব্দুর সাত্তারের ছেলে মফিজুল ইসলাম (২৫), তার ভাই হাফিজুল ইসলাম (৩০), একই এলাকার মৃত আবু জাফরের ছেলে আক্তারুল ইসলাম (৩৮) ও মৃত সুফিয়ানের ছেলে মো. আয়ূব হোসেন (৩৫) পাকা ছাদের ঘর নির্মাণ করছে। আমার জমি দখল করে অবৈধ ভাবে ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ করার জন্য স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে গেলে তারা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এবং এসব বিষয় নিয়ে কোন শালিস-বিচার করবে না বলে জানিয়ে দেয়। লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, গত সোমবার (১০ সেপ্টেস্বর) সকাল ৯টায় বোয়ালিয়া ফকিরপাড়া মোড়ে আমার নিজ দোকান সরদার মেডিকেল হলে বসে জমি উদ্ধারের জন্য স্থানীয় কেড়াগাছি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর একটি অভিযোগ লেখার সময় উপরিউক্ত চারজন বাজারে আসে এবং আমার দোকানে জোরপূর্বক প্রবেশ করে চিৎকার করে বলতে থাকে, তুই দেখিস না এখন সাংবাদিক পেটালে কিছুই হয় না? প্রতিদিন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বড় বড় সাংবাদিকদের মারপিট করা হচ্ছে। অনেক দামি সাংবাদিক খুন হয়েছে কিন্তু বিচার হয়নি। আর তুই তো গ্রামের দেড় টাকার সাংবাদিক, তোকে মারলে কেউ জানতেও পারবে না। আমরা যেটা বলবো সেটাই হবে। এনিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোর লাশ সোনাই নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হবে। বাজারের সকল ব্যবসায়ীদের সামনে আমাকে প্রাণ নাশের হুমকি ও সাংবাদিকদের নিয়ে এসব কথা বলে বীরদর্পে চলে যায়। এঘটনার পর বাজার ব্যবসায়ীদের পরামর্শে একই দিন বিকালে আমাকে হত্যার হুমকি ও জোরপূর্বক জমি দখল মুক্ত করতে উক্ত চার সন্ত্রাসীর নাম উল্লেখ করে কলারোয়া থানায় একটি রিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। পরে থানায় অভিযোগের বিষয়ে তারা জানতে পেরে তারা আমাকে হত্যা করার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা করছে বলে জানতে পেরেছি।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক ইমাদুল কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আজ আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা জীবনের চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। সন্ত্রাসীরা আমাকে হত্যার হুমকি দিয়ে বলছে সাংবাদিক মারলে কিছই হয় না। এসব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ প্রশাসনের নিকট অনুরোধ জানান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মাজেদ, অ্যাডভোকেট আবুল বাশার, রফিকসহ তার গ্রামের ৩০ থেকে ৪০ জন সাধারণ মানুষ।
এবিষয়ে অভিযুক্ত মফিজুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের জমিতে আমরা ঘর নির্মাণ করছি এবিষয়টি আপনাদের না দেখাই ভালো।
কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মারুফ আহম্মদ লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তার অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সাংবাদিককে হত্যার হুমকির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/