Site icon suprovatsatkhira.com

‘শিশু জন্মের তিন দিনের মধ্যে গোসল করানো যাবে না’

বাহলুল করিম: জাতীয় নবজাতক স্বাস্থ্য কর্মসূচির আলোচনায় বক্তারা বলেছেন, অবশ্যই নবজাতকে হাসপাতালে ডেলিভারি করাতে হবে। হাসপাতালে ডেলিভারি করালে নবজতাক ঝুঁকিমুক্ত থাকে। আলোবাতাসপূর্ণ ঘরে নবজাতকের জন্মের ব্যবস্থা করতে হবে। বাচ্চার জন্য আলাদা টেবিলের ব্যবস্থা রাখতে হবে। ডেলিভারির সাথে সাথে বাচ্চার নাড়িতে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা হতে পারে। এজন্য পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্নভাবে বাচ্চার নাড়ি কাটতে হবে। আাগেকার দিনে কিন্তু বাঁশের চাঁচাড়ি দিয়ে বাচ্চার নাড়ি কাটা হতো। তখন অনেক সমস্যা হতো। নবজাতক শিশুর পরিচর্যার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় হলো জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যেই বাচ্চাকে মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। প্রথমে নবজাতক শিশুর চোখের যতœ নিতে হবে। চোখের যতœ নেওয়ার ক্ষেত্রে দুই পিচ গজ ব্যবহার করতে হবে। প্রতিটি চোখের জন্য একটি করে গজ ব্যবহার করে চোখ পরিষ্কার করতে হবে। তারপর নাকের যতœ নিতে হবে। নাকের যতœ নেওয়ার ক্ষেত্রে কটন বার্ড ব্যবহার করা যাবে না। পরিষ্কার গজ বা কাপড় ব্যবহার করতে হবে। এরপর জিহŸার যতœ নিতে হবে। জিহŸার যতœ নেওয়ার ক্ষেত্রে ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী জেল ব্যবহার করে জিহŸা পরিষ্কার করতে হবে। নবজাতক শিশু জন্মের তিন দিনের মধ্যে কোন অবস্থাতেই গোসল করানো যাবে না। এটি অবশ্যই বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। অন্যথায় নবজাতক শিশুর মৃত্যুও হতে পারে। তিন দিন পরে উষ্ণ গরম পানি দিয়ে শিশুকে গোসল দিতে হবে। নবজাতক শিশুকে ৬ মাস পর্যন্ত এক ফোঁটা পানিও খেতে দেওয়া যাবে না। শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। তাহলে শিশু মৃত্যুর হার অনেকটা কমানো সম্ভব হবে। শিশু জন্মের পরে এই বিষয়গুলো খেয়াল রাখলে অনেক সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যাবে।
বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় সিভিল সার্জন অফিসের সভা কক্ষে ‘প্রতিটি নবজাতকের বাঁচার অধিকার প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার’ এই প্রতিপাদ্যে জেলা পর্যায়ে জাতীয় নবজাতক স্বাস্থ্য কর্মসূচির আওতায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
সভায় সিভিল সার্জন ডা. তাওহীদুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সিসি’র সহকারি পরিচালক এবং ছওঞ পরিবার পরিকল্পনার ডিস্ট্রিক্ট কনসালটেন্ট ডা. মুজিবুর রহমান ও সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনী) ডা. এহছেন আরা। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন অফিসের রথীন্দ্রনাথ সরকার।
সভায় সিভিল সার্জন বলেন, জন্মের প্রথমে যদি গোড়া কেটে দেওয়া হয় তাহলে তাদের কখনো উন্নয়ন হয় না। প্রতিটি নবজাতকের যতœ নিতে হবে। ২০১৮ সালের যে অঙ্গিকার তা বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা সকলে একসাথে কাজ করলে ও জনগণকে সচেতন করলে শিশু মৃত্যুর হার কমানো সম্ভব হবে। সুস্থ শিশুর জন্ম হবে। প্রতিটি নবজাতকের বাচার অধিকার প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার আমরা সফল করতে পারবো।
সভায় জুনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা সহকারি শাহিনুর খাতুনের পরিচালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাতক্ষীরা নার্সিং ইনস্টিটিউটের নার্সিং ইনস্ট্রাক্টর চঞ্চলা রানি ও সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার সেলিনা আক্তার।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিভিল সার্জন অফিসের সুদেব কুমার দেসহ নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও নার্সবৃন্দ। এর আগে সকাল ১০টায় ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল হান্নান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মেরিনা আক্তারের নেতৃত্বে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সিভিল সার্জন অফিসে গিয়ে শেষ হয়।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version