Site icon suprovatsatkhira.com

পাটকেলঘাটায় গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ!

পাটকেলঘাটা প্রতিনিধি: যৌতুকের দাবিতে শাহানারা খাতুন (২০) নামে এক গৃহবধূকে নির্যাতন চালিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। রোববার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত গৃহবধূ শাহানারা খাতুন পাটকেলঘাটা থানাধীন উত্তর শার্শা গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী আসাদুল গাজীর স্ত্রী ও পার্শ্ববতী এনায়েতপুর শানতলা গ্রামের জলিল সরদারের মেয়ে।
এনায়েতপুর শানতলা গ্রামের হোসনে আরা খাতুন জানান, শাহানারা খাতুন তাদের সাত ভাই-বোনের মধ্যে সকলের ছোট। ২০১৬ সালের আগস্ট মাসে তার সঙ্গে উত্তর শার্শা গ্রামের অমেদ গাজীর ছেলে আসাদুলের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দেওয়া হয়। এ ছাড়া সোনার গহনাসহ পরবর্তীতে জমি বন্দক রাখার জন্য ৪০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। শাহানারাকে দেওয়া হয় একটি মোবাইল ফোন। বিয়ের পরপরই বড় ভাই আজাহারুলের সঙ্গে আসাদুল মালয়েশিয়ায় চলে যায়। বিয়ের পর থেকে আসাদুল ও তার পরিবারের সদস্যরা শাহানারাকে বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করতো। টাকা দিতে না পারলে তাকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন চালানো হতো। বিষয়টি জানালে মোবাইলে আসাদুল তার স্ত্রী শাহানারাকে হুমকি দিতো। একপর্যায়ে শাহানারার মোবাইল ফোনটি নিয়ে নেয় তার শ্বাশুড়ি চন্দনা বিবি।
হোসনে আরা আরো আরও জানান, প্রতিবেশীদের মুখে খবর পেয়ে শনিবার রাত ১০টার দিকে তারা শাহানারার শ্বশুর বাড়িতে যান। শ্বাশুড়ি চন্দনা বিবি, বড় ননদের স্বামী চৌরাস্তার নূর হোসেন, চাচা শ্বশুর তাকে নির্যাতনের পর গলায় দড়ি দিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে দিয়ে দরজায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে গেছে বলে এলাকাবাসী তাদেরকে জানায়। একপর্যায়ে গ্রামবাসী দড়ি কেটে মুমূর্ষু শাহানারাকে রাতেই সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এদিকে, স্থানীয় ইউপি সদস্য আখতার হোসেন জানান, বিয়ের পর থেকে শ্বাশুড়ি, ননদ এমনকি স্বামী আসাদুলের সাথেও প্রায় পারিবারিক বিষয়ে ঝগড়া হতো শাহানারার। এরই জের ধরে শনিবার সন্ধ্যায় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় সে। ঘরের ভিতর দাপাদাপির শব্দ শুনে পরিবারের লোকজন চিৎকার করলে প্রতিবেশিরা তাকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং বোরবার সন্ধ্যায় সদর হাসপাতালে মৃত্যু বরণ করে।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. মাহাবুবর রহমান জানান, শাহানারার থুতনিসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়না তদন্ত ছাড়া মৃত্যু কারণ বলা যাবে না।
পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া মৃতের ময়না তদন্তও করা হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পেলে হত্যা না আত্মহত্যা তা বলা যাবে।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version