Site icon suprovatsatkhira.com

দুই প্রান্তে সভাপতি-সম্পাদক : জেলা ছাত্রলীগের কোন্দল প্রকাশ্যে!

ডেস্ক রিপোর্ট: বেশ কিছু দিন ধরে গুঞ্জন চলছিল সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল ইসলাম রেজা ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমানের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছে। অবশেষে এই গুঞ্জন সত্য হয়ে জেলা ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্যে এলো।
গত বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল ইসলাম রেজার ইন্ধনে কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমানের বহিষ্কার চেয়ে দেওয়া অভিযোগই এই কোন্দল প্রকাশ্যে এনেছে। ঠিক তেমনি বর্তমানে ঢাকার পথে রয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান। তিনিও তার সমর্থকদের নিয়ে কেন্দ্রে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল ইসলাম রেজার বিরুদ্ধে অভিযোগ করবেন বলে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে তাকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন জেলার সাতটি উপজেলা ও সরকারি কলেজ শাখার ১২জন সভাপতি-সম্পাদক। অভিযোগকারী ১২জন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বৃহস্পতিবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে উপস্থিত হয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নিকট এই অভিযোগ তুলে দেন। অভিযোগপত্রে সৈয়দ সাদিকুর রহমানকে বহিষ্কার না করলে গণপদত্যাগের হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান সাদিকের অসদাচরণ তথা অশ্লীল ভাষা, গালিগালাজ ও উপজেলা এবং কলেজ কমিটি ভেঙে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে অর্থ দাবিতে আমরা বিব্রত। এমতাবস্থায় সাধারণ নেতা-কর্মী ও শিক্ষার্থীরা জেলা ছাত্রলীগের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলছে এবং সাংগঠনিক স্থবিরতা দেখা দিচ্ছে। এখনই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়ে তাকে বহিষ্কার না করলে আমরা গণপদত্যাগ করবো।
লিখিত এই অভিযোগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন- সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী শাহেদ পারভেজ ইমন, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহিন আলম সাদ্দাম, কলারোয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম আবু সাঈদ, সাধারণ সম্পাদক শাকিল খান জজ, তালা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ সাদী ও সাধারণ সম্পাদক মশিউল আলম সুমন, সাতক্ষীরা সিটি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মহিদুল ইসলাম, আশাশুনি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আসমাউল হোসাইন, কালিগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শেখ শাওন আহমেদ সোহাগ, শ্যামনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল হাকিম সবুজ, দেবহাটার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান সবুজ ও সাধারণ সম্পাদক মো. হাফিজুল ইসলাম হাফিজ।
তবে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমান জানান, আমি ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে মাদক গ্রহণ, চাঁদাবাজি ও কমিটির মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়াসহ কয়েকটি অভিযোগ করায় জেলা সভাপতি রেজাউল ইসলাম রেজা তাদের সংগঠিত করে ঢাকায় নিয়ে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। আমিও পাল্টা অভিযোগ দিতে ছাত্রলীগের অনেক নেতাকে সাথে নিয়ে ঢাকা যাচ্ছি।
তিনি আরও জানান, আমি কলারোয়ার সভাপতি-সম্পাদক ও আশাশুনির সভাপতির বিরুদ্ধে মাদক গ্রহণের অভিযোগ করি। এ ছাড়া দেবহাটার কমিটির বয়স সাত বছর এবং এর সভাপতি ও সম্পাদক বিবাহিত ও তাদের ছেলেমেয়ে রয়েছে। এসব অভিযোগ করায় জেলা সভাপতি তাদের সংগঠিত করে বিষয়টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেন ‘আমিও পাল্টা অভিযোগ দিতে আশাশুনি ছাত্রলীগের সভাপতি স্বাদ, কালিগঞ্জের সেক্রেটারি ফিরোজ, সদর সেক্রেটারি শাওন, জেলা দফতর সম্পাদক মৃণাল মন্ডল, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ সেক্রটারি আবুল কালাম, সিটি কলেজ সেক্রেটারি আলিফ, পলিটেকনিক কলেজ সভাপতি মাহমুদুল ও সেক্রেটারি শামীমসহ বেশ কয়েকজন নেতাকে নিয়ে ঢাকা যাচ্ছি’।
তবে এসব বিষয়ে জানবার জন্য সাতক্ষীরা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল ইসলাম রেজার সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি সেক্রেটারির বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ সম্পর্কে কিছুই জানি না। আমিও ঢাকায় ছিলাম। কিন্তু কখন যে তারা কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে এসব অভিযোগ দিয়েছেন তাও জানি না।
প্রসঙ্গত, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদিকুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগকারী ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়ে জেলা সভাপতি রেজা কয়েকদিন আগে ঢাকায় যান।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version