জি এম মোস্তাক আহমেদ, কপিলমুনি: কপিলমুনিতে নিম্মমানের উপকরণ ব্যবহার করে নাছিরপুর-রেজাকপুরের প্রায় দুই হাজার তিন’শ মিটার কার্পেটিং রাস্তা নির্মাণের কাজে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। রাস্তায় নিম্মমানের খোঁয়া ব্যবহার করায় সামান্য বৃষ্টিতে গলে যাচ্ছে এই খোঁয়ার আস্তরণ। এতে রাস্তায় বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে চলাচলে ব্যাপক ভোগান্তির পোহাচ্ছে এলাকাবাসী। প্রতিষ্ঠানটির তদারকদের নিকট স্থানীয়দের সাথে নিয়ে জনপ্রতিনিধিরা বারংবার অভিযোগ করলেও তা কোন প্রকার আমলে নেয়নি সংশ্লিষ্টরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এলজিইডি’র অর্থায়নে প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন রাস্তাটি নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শুরু থেকেই দুর্নীতির আশ্রয় নেয়। সড়কের মাটি কেটে যৎসামান্য বালু ফেলে শুরু হয় রাস্তা তৈরির কাজ। রাস্তার কোথাও কোন পাইলিং না করে পলিথিন দিয়ে চালিয়ে যায় পাইলিংয়ের কাজ। এক নং পিকেট ইটের খোঁয়া দেওয়ার কথা থাকলেও শুরু থেকে ব্যবহার করা হচ্ছে আদলা (ভাঙ্গা) ইট। সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীকে সামনে রেখে স্থানীয়দের বোকা বানাতে নি¤œমানের খোঁয়ার উপর দেয়া হয় সামান্য পিকেটের আস্তরণ। এতে করে সামান্য বৃষ্টিতে গলতে শুরু করেছে খোঁয়ার প্রলেপ। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শাক দিয়ে মাছ ঢাকার জন্য তাৎক্ষণিক সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের চোখ ফাঁকি দিতে নি¤œমানের খোঁয়া ঢাকতে তড়ি-ঘড়ি করে ফের বালু ঢালে। উপরন্তু তারা সরকার ও দলীয় নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে দ্রæত কাজ করতে থাকেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, দাম্ভিক ও সুচতুর ঠিকাদার অতিদ্রæত নি¤œমানের ইটের উপর সামান্য পিকেট ভেঙ্গে ছড়িয়ে দিয়ে কোন রকম রুলার ব্যবহার করে খোঁয়াটা বসিয়ে এলাকা থেকে দ্রæত কেটে পড়েন। ঘটনাটি ঈদুল ফিতরের আগের। সর্বশেষ ঈদুল আযহাতে খোঁয়া ভাঙ্গা পথে দীর্ঘ ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করতে হয় আমাদের। এতে আমরা রাস্তায় চলাচলে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছি। কয়েক মাস কাজ বন্ধ রাখার পর সম্প্রতি তারা খোঁয়া ভাঙার কাজ শুরু করেছেন। এদিকে নিচে পর্যাপ্ত বালু না দিয়ে তার উপর নি¤œমানের খোঁয়া দিয়ে রোলিং করায় গত কয়েক দিনের সামান্য বর্ষণে রাস্তার হেজিং ভেঙ্গে বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। বর্ষার পানিতে মাটি সরে যাওয়ায় বিভিন্ন স্থানে পলিথিনের কৌশলী পাইলিং উঁকি দিচ্ছে ধ্বসে পড়ার। পিচ ঢালাই’র পূর্বেই অনেক স্থানে দেখা দিয়েছে ফাঁটল। পাইলিং বিহীন নি¤œমানের উপকরণ সামগ্রী দিয়ে দায়সারাভাবে রাস্তার নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন হলে সরকারের উন্নয়নমুলক কোটি টাকার প্রকল্পটি ভেস্তে যেতে পারে কয়েক বছরে।
এ ব্যাপারে প্রকল্প কর্মকর্তা পাইকগাছা উপজেলা উপ-সহকারি প্রকৌশলী বি এম ফরিদুজ্জামান বলেন, গত অর্থ বছরে রাস্তাটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নানান জটিলতায় বিলম্বিত হচ্ছে। তবে ঠিক কবে নাগাদ কাজ শেষ হবে তা নিয়েও বিস্তারিত বলতে পারেননি এই কর্মকর্তা।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ নি¤œমানের উপকরণ সামগ্রীর ব্যবহার বন্ধ ও দ্রæত নির্মাণ কাজ সম্পন্নের দাবিতে সোমবার বিকেলে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী ছেঁড়া স্যান্ডেল হাতে নির্মাণাধীণ নাছিরপুর-রেজাকপুর সড়কের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে সমবেত হন।
কপিলমুনির নাছিরপুর-রেজাকপুরের রাস্তা নির্মাণে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/