Site icon suprovatsatkhira.com

মণিরামপুরে পুলিশ প্রহরায় চলছে জুয়ার বোর্ড

মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি: মণিরামপুরে পুলিশ প্রহরায় চলছে জুয়ার বোর্ড। একই সাথে দেদারছে চলছে চোরাকারবারী। এসব অবৈধ খাত থেকে প্রতিমাসে পুলিশের পকেটে যাচ্ছে কয়েক লাখ টাকা। নিয়মিত মাসোহারা পেয়ে পুলিশ থাকছে তুষ্ট। সম্প্রতি পুলিশের বিরুদ্ধে সর্বসাধারণের পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করেও প্রতিকার পায়নি ভুক্তভোগীরা। উল্টো তাদেরকে প্রতিনিয়ত পুলিশি হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।
একটি সূত্র জানায়, চোরাচালান সিন্ডিকেটে থেকে নেহালপুর ফাঁড়ি ইনচার্জ খাইরুল বাশার, জুয়ার বোর্ড থেকে রাজগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আকরাম হোসেন চৌধূরী এবং মাছের ঘেরে পোল্ট্রির বিষ্ঠা ব্যহারের সুযোগ দিয়ে ঘের মালিকদের কাছ থেকে রতন সাহা নামে থানার গাড়ি চালক নিয়মিত অর্থ আদায় করছেন।
জানা যায়, পুলিশ প্রহরায় উপজেলার হাজরাকাটি বেলতলার আবুল হাসান ও আব্দুল কুদ্দুসের নেতৃত্বে কপোতাক্ষ নদের পাড়ে (পুরাতন ঈদগাহ) পলিথিন ঘেরা টোং ঘরের মধ্যে নিয়মিত বসছে জুয়ার আসর। একই সাথে চলে মাদকের কারবার। জুয়ার আসরে প্রতিদিন অর্ধকোটি টাকার লেনদেন হয় বলে জানা গেছে। রাজগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলতাফ হোসেন, মাহমুদুর রহমান সন্ধ্যার পর সেখানে গিয়ে অর্থ নিয়ে আসেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া নির্বিঘেœ জুয়ার বোর্ড চালাতে একই এলাকার ইউসুফ আলী, মোজহার হোসেন, নাশকতার মামলার আসামি রবিউল ইসলাম, তরিকুল ইসলাম, মশিয়ার রহমানলিটনসহ প্রায় ২০ জন পাহারার নিয়োজিত রয়েছে। খেলতে আসা জুয়াড়িদের টাকা ফুরিয়ে গেলে জুয়াড়িদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল বন্ধক রেখে নগদ টাকা দেয় আলমগীর হোসেন ও সোহাগ হোসেন নামের দুই যুবক। অবশ্য জুয়ার বোর্ড থেকে অর্থ নেয়ার কথা অস্বীকার করে এএসআই আলতাফ হোসেন বলেন, এ বিষয় জানতে চাইলে স্যারের (রাজগঞ্জ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আকরাম হোসেন চৌধুরী) সাথে কথা বলেন। আকরাম হোসেন চৌধুরী বলেন, আগে এখানে জোয়ার আসর বসতো ঠিকই কিন্তু এখন তা বন্ধ রয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, এখনো সেখানে গভীর রাত পর্যন্ত বসছে জুয়ার আসর। ওই জুয়ার আসর থেকে পুলিশ মাসে ৬০ হাজার টাকা পকেটেস্থ করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে শহিদুল ইসলামসহ এলাকাবাসীর অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেয়ার পর তদন্ত হলেও অদ্যাবধি জুয়ার বোর্ড বন্ধ হয়নি।
এদিকে, অবৈধ ভারতীয় মালামালের মালিকদের কাছ থেকে সাপ্তাহিক কিংবা মাসিক চুক্তিতে গড়ে মাসে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা আদায় করেন নেহালপুর ফাঁড়ি ইনচার্জ খাইরুল বাশার। এ ব্যাপারে ফাঁড়ি ইনচার্জ খাইরুল বাশার অর্থ গ্রহণের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, কেউ প্রমাণ দিতে পারবে না। মণিরামপুর বাজারের নৈশ প্রহরীর কমান্ডার মাহবুবুর রহমান জানান, রাত ১২টা থেকে আড়াই টা পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে বস্তা ভর্তি ১০ থেকে ২৫টি পিকআপ-ট্রাকযোগে পোল্ট্রি বিষ্ঠা পৌরশহর পার হয়। বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সূত্র জানায়, যশোরের রাজারহাটের মিন্টু ও আওয়াল নামের দুই ব্যক্তির মাধ্যমে রাজারহাট পিকনিক কর্নারের কাছ থেকে পোল্ট্রির বিষ্ঠা পিকআপ, ট্রাকে বস্তা ভর্তি করা হয়। যা মণিরামপুর ও কেশববপুর উপজেলার সুলতানের ও আসাদের মাছের ঘেরসহ বিভিন্ন জায়গায় নেয়া হয়। আক্কাস জানায়, তিনি কেবল পিকআপ ঠিক করে দেন, বিনিময়ে দুই থেকে তিনশ’ টাকা পান। মিন্টু জানান, পোল্ট্রির বিষ্ঠা নির্বিঘেœ পৌছে দেয়ার শর্তে নেহালপুর ফাঁড়ি ইনচার্জ গাড়ি প্রতি ৫শ’ ও ওসির গাড়ি চালক রতন সাহার মাধ্যমে গাড়ি প্রতি ১ হাজার টাকা দেয়া হয়।
মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোকাররম হোসেন বলেন, এসব ঘটনা তার অজানা।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version