ডেস্ক রিপোর্ট: কালিগঞ্জের প্রবাহমান সাপখালী খাল দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে ভূমিদস্যু নুরুল ইসলাম মোড়ল। সম্প্রতি জনগণের ব্যবহার্য খালটির সকল প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে প্রশাসন অভিযান চালালেও ভূমিদস্যু নুরুল ইসলাম মোড়ল নিজ স্বার্থ উদ্ধারে কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নামে দুই কোটি টাকার মাছ লুটের অভিযোগ করেও ক্ষ্যান্ত হয়নি। প্রবাহমান খাল দখলে এখনো ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছেন নুরুল ইসলাম মোড়ল।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সাতক্ষীরা জেলার কালিগঞ্জ উপজেলাধীন ২৩১নং নেংগী মৌজার এসএ ১৫৯ খতিয়ানে এ এলাকার তৎকালীন জমিদার কানাই লাল রায়ের নামে ৪৭৭নং দাগে ১০.৩৮০০ একর নদী, ৮৪৭নং দাগে ১৪.৭১০০ একর নদী ও ১৩১৬নং দাগে ৮.৩৭০০ একর খালসহ অন্যান্য দাগে নদী খাল ও পথ শ্রেণির সাধারণের ব্যবহার্য জমি রেকর্ড প্রকাশিত হয়।
পরবর্তীতে বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইনের ২০/২ ধারা মতে, এ দপ্তরের ৩/১৯৮৬-১৯৮৭ মিস কেসে এই সম্পত্তি সরকারের ১নং খতিয়ানে রেকর্ড সংশোধিত হয়। বর্ণিত সম্পত্তি চলতি জরিপে বাংলাদেশ সরকারের ১নং খতিয়ানে রেকর্ড প্রকাশিত হয়। বর্ণিত দাগসমূহ পরস্পর সম্পর্কযুক্ত এবং প্রবাহমান নদী। আবহমান কাল থেকে এ অঞ্চলের বিষ্ণুপুর, দক্ষিণ শ্রীপুর, কুশলিয়া, মৌতলা ও কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের পানি এই সাপখালী খাল নামে পরিচিতি এই নদী ও খাল দিয়ে এলাকার গলঘসিয়া নদীতে পতিত হওয়ার কারণে এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতো না।
কিন্তু সাধারণের ব্যবহার্য সম্পত্তি আত্মসাতের উদ্দেশ্যে ভূমিদস্যু শেখ শহর আলী, শেখ সমশের আলী, শেখ জবেদ আলী, শেখ আনছার আলী ৫২২/১৯৬৬-১৯৬৭নং সার্টিফিকেট মামলায় নিলাম খরিদের দাবি করে ১৪.০৯.১৯৮৫ তারিখে ৪৯০৮নং দলিলে সম্পাদক নেংগী জামে মসজিদ বরাবর ওয়াকফ করায় ওয়াকফ গ্রহীতা বিজ্ঞ কালিগঞ্জ সহকারি জজ আদালতে ১০০/১৯৯৭ নং দেওয়ানী মামলা দায়ের করে পরাজিত হওয়ার পর ৩৯/২০০২ নং সানি মামলা দায়ের করেও পরাজিত হয়।
শেখ শহর আলী, শেখ সমশের আলী, শেখ জবেদ আলী, শেখ আনছার আলীর নিকট থেকে জালিয়াতি লিজ ডিডের মাধ্যমে মো. নুরুল ইসলাম মোড়ল ও গোপালগঞ্জের চন্দ্র দিঘলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বি এম ওবায়দুর রহমান সম্প্রতি ওই নদী ও খাল শ্রেণির জমিতে আড়াআড়ি বাঁধ পাটা নির্মাণ করে জবরদস্তিভাবে মৎস্য চাষ করায় এলাকায় চলতি বর্ষা মৌসুমে ব্যাপক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর আহমেদ মাসুমের নেতৃত্বে ও কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নূর আহমেদ মাসুমের উপস্থিতিতে এ খালের সকল প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করা হয়। প্রতিবন্ধকতা অপসারণকালে এলাকার হাজার হাজার জনতা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও সেসময় কোন প্রকার লুটপাট কিংবা মাছ ধরার ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু নিজ স্বার্থ উদ্ধারে ভূমিদস্যু নুরুল ইসলাম মোড়ল কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নামে দুই কোটি টাকার মাছ লুটের অভিযোগ করেছেন। এতে এলাকাবাসী বিস্মিত হয়েছে।
এলাকাবাসীর দাবি, এলাকার জলাবদ্ধতা প্রতিরোধে খালটি সম্পূর্ণ প্রতিবন্ধকতা মুক্ত করে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হোক।
এ ব্যাপারে কালিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মৌতলা ইউপি চেয়ারম্যান সাঈদ মেহেদী বলেন, জাল যার, জলা তার। এই খালে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু ভূমিদস্যু নুরুল ইসলাম মোড়ল এই খালে বাধ দিয়ে প্রবাহ ধ্বংস করছে। এতে বাধা দিলে এলাকাবাসীর উপর নেমে আসছে অত্যাচার নির্যাতন। তিনি খালটি জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার দাবি জানিয়ে বলেন, খাল দখলের দায়ে ভূমিদস্যু নুরুল ইসলাম মোড়লের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
ফলোআপ: কালিগঞ্জের প্রবাহমান সাপখালী খাল দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে ভূমিদস্যু নুরুল ইসলাম মোড়ল
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/