Site icon suprovatsatkhira.com

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক পদায়নে ঘুষ বাণিজ্য!

ডেস্ক রিপোর্ট: সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে সহকারী শিক্ষক পদায়নে কয়েক লাখ টাকা ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পছন্দমত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পদায়ন নিতে শিক্ষকদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে ১০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. রুহুল আমিনের নামে এ টাকা গ্রহণ করেছেন অফিসের প্রধান সহকারী শেখ গোলাম মোস্তফা ও ক্যাশিয়ার জাহাঙ্গীর আলম সিদ্দীক। তবে তাদের দাবি, এ বছর পদায়নে তাদের কোন হাত নেই। যা করার সরাসরি ডিপিইও স্যার করেছেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের স্মারক নং প্রাশিআ/৭(নিয়োগ)সশিনি(রাজস্ব)২০১৪/২৪৯, তারিখ ৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ খ্রি. অনুসারে জেলায় ১২১ জনকে সহকারি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়াও জন্য চুড়ান্ত করা হয়। এর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ২১ জন, কালিগঞ্জে ৯ জন, কলারোয়া ৭ জন, আশাশুনিতে ২৫ জন, দেবহাটায় ২ জন ও শ্যামনগরে ৩৯ জন চুড়ান্ত হন। চুড়ান্ত তালিকায় যাদের নাম আছে তাদের আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে যোগদান করার জন্য ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. রুহুল আমিন নির্দেশ প্রদান করেন। নির্দেশের কপি ১৬ সেপ্টেম্বর স্বাক্ষর করলেও তা স্ব স্ব উপজেলায় প্রেরণ করা হয় ২৩ সেপ্টেম্বর।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এসব শিক্ষকদের জেলার বাইরে ও দুর্গম এলাকায় বদলী করাসহ বিভিন্ন ভয় দেখিয়ে নতুন এসব শিক্ষকদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা হয়েছে। যে সব বিদ্যালয়ে শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে সে সব বিদ্যালয়ে কোন শিক্ষক না দিয়ে টাকা নিয়ে নিজ নিজ এলাকায় বদলী দেওয়া হয়েছে। টাকা ছাড়া কিন্তু ডিপিইও স্যার সই করবে না এমন কথা বলে শিক্ষা অফিসের প্রধান সহকারি শেখ গোলাম মোস্তফা ও ক্যাশিয়ার জাহাঙ্গীর আলম সিদ্দীক এ টাকা আদায় করেছেন। তবে তারা দাবি করেছেন, এ বছর পদায়নের বিষয়ে তারা কিছুই জানে না। তারা বলেন, যারা পদায়নের বিষয়ে আলোচনা করতে এসেছিল তাদের সরাসরি ডিপিইও স্যারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। এবার বিষয়টি তিনি নিজেই দেখেছেন।
খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়, জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট রয়েছে। সেই সব বিদ্যালয়ের কথা চিন্তা না করে টাকা নিয়ে বদলি দেওয়া হয়েছে। এমন অনেক বিদ্যালয় আছে যেখানে শিক্ষক সংকট নেই, অথচ সেখানেও পদায়ন করা হয়েছে।
শিক্ষক সংকট না থাকলেও সেখানে পদায়নের বিষয়টি স্বীকার করেছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নিজেও। এ বিষয়ে তিনি জানান, এটি তিনিও ফিল করেছেন। তবে এটি নিয়ে বিচলিত না হওয়ার কথা বলেছেন তিনি। তিনি বলেন, জেলার বাইরে প্রায় ১২১ জন পুল শিক্ষক আছে। তারা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সাতক্ষীরায় যোগদান করবে। তখন যেসব বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট রয়েছে সে সব বিদ্যালয়ে শিক্ষক দেওয়া হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের প্রধান সহকারি শেখ গোলাম মোস্তফা বলেন, আমি কোন টাকা গ্রহণ করি নি। তবে জাহাঙ্গীর সাহেবের কথা আমার জানা নেই।
বিষয়টি নিয়ে ক্যাশিয়ার জাহাঙ্গীর আলম সিদ্দীকের সাথে কথা বলা হলে তিনি বলেন, এ বছর এমন কোন সুযোগ পাইনি। আমার কাছে যারা এসেছিল তাদের ডিপিইও স্যারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। এর বাহিরে আমি কিছু জানি না।
এ বিষয় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. রুহুল আমিন বলেন, পদায়নের কথা বলে টাকা নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক নিয়ম মেনেই পদায়ন দেওয়া হয়েছে। ১৬ সেপ্টেম্বর স্বাক্ষর করে এক সপ্তাহ বিলম্ব করে ২৩ সেপ্টেম্বর উপজেলায় চিঠি প্রেরণ করার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্বাক্ষরের পরেও কিছু ভুল ছিল সেগুলো ঠিক করতে একটু সময় লেগেছে। তাই দেরিতে চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া আর কিছু না।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version