শেখ শাওন আহমেদ সোহাগ, কালিগঞ্জ: কালিগঞ্জের কৃষ্ণনগর ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা জাতীয় পার্টির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কেএম মোশারফ হোসেন হত্যা মামলায় গ্রেফতার হওয়া আরও দুই আসামি হত্যাকাÐে জড়িত থাকার বিষয়ে আদালতে স্বীকারেক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) কালিগঞ্জ থানা পুলিশ কৃষ্ণনগর গ্রামের শৈলেন্দ্রনাথ মন্ডলের ছেলে রণজিৎ মন্ডল ও শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ি ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত ইরফান ঢালীর ছেলে ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি জলিল গাইনের মামা মিনারুল ইসলাম খোকনকে আদালতে হাজির করলে তারা দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানান কালিগঞ্জ থানার ওসি হাসান হাফিজুর রহমান। এ সময় রণজিৎ ও খোকন পৃথকভাবে হত্যায় সহযোগিতা করার কথা উল্লেখ করেছে। কিভাবে চেয়ারম্যানকে হত্যা করা হয় এবং তারা কি কি দায়িত্ব পালন করেছে তা উল্লেখ করে জবানবন্দি দিয়েছে তারা। এমনকি তাদের সাথে আর কে কে ছিল এবং হত্যার পর তারা কোন স্থানে মিলিত হয়েছিল তাও আদালতকে জানিয়েছে তারা।
এর আগে গ্রেফতার হওয়া কৃষ্ণনগরের বেনাদোনা গ্রামের মৃত মোক্তার বিশ^াসের ছেলে মোজাফফর বিশ^াসও হত্যাকাÐে জড়িত থাকার বিষয়ে আদালতে জবানবন্দি দেন।
এদিকে, এ হত্যাকাÐের ঘটনায় পুলিশ এ পর্যন্ত এক গ্রামপুলিশসহ মোট ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো- বেনাদোনা গ্রামের মৃত মোক্তার আলী বিশ^াসের ছেলে মোজাফফর বিশ^াস (৪৫), কৃষ্ণনগর গ্রামের চিত্তরঞ্জন ঘোষের ছেলে মন্টু ঘোষ (৩৫), কাশিমাড়ি ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের মৃত ইরফান ঢালীর ছেলে মিনারুল ইসলাম খোকন (৪৩), কৃষ্ণনগর গ্রামের শৈলেন্দ্রনাথ মন্ডলের ছেলে রণজিৎ মন্ডল (৩৫) ও কালিকাপুর গ্রামের হাজিরউদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের গ্রামপুলিশ রাজগুল বিশ্বাস (৪০)।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রাজিব হোসেন জানান, মামলার এজাহার এবং গ্রেফতার হওয়া আসামিদের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে হত্যাকাÐের সাথে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
এদিকে, কালিগঞ্জের কৃষ্ণনগর ইউপি চেয়ারম্যান ও জেলা জাতীয় পার্টির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কেএম মোশারাফ হত্যা মামলার ৪নং আসামি কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের বরকত গাজীর ছেলে রেজাউল ইসলাম (৪৫) এর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ অভিযান চললেও বাড়িতে কেউ ছিল না। তবে তার বাড়ি থেকে চোরাই বিদ্যুৎ লাইনের দুই ব্যান্ডেল তার, এলইডি টিভি, অবৈধ কারেন্ট জাল ও বিভিন্ন প্রকারের চকলেট উদ্ধার হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রেজাউল ঘটনার পর থেকে তার বাড়ির পাশের ধান ক্ষেতের মধ্যে লুকিয়ে ছিলো। বৃহস্পতিবার তার স্ত্রীর সহযোগিতায় বোরকা পরে গ্রাম থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় এলাকাবাসী বিষয়টি বুঝতে পেরে রেজাউলকে ধাওয়া করে। তবে তাকে ধরতে পারেনি। এরপর কালিগঞ্জ থানা পুলিশ তার বাড়িতে তল্লাশি চালায়। রেজাউল ইসলাম দীর্ঘদিন যাবৎ কৃষ্ণনগর এলাকায় বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকাÐ পরিচালনা করে আসছিলো। তার নামে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়াও পুলিশ মোশারফ হত্যা মামলায় কৃষ্ণনগর গ্রামের সুন্দর আলী তরফদারের ছেলে আব্দুল হামিদ তরফদারকে সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে কৃষ্ণনগর বাজার থেকে আটক করেছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত থানায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছিলো।
চেয়ারম্যান মোশারফ হত্যার ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে আরও দু’জন, আসামি রেজাউলের বাড়িতে তল্লাশি
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/