শেখ শাহীন, কেশবপুব (যশোর): কেশবপুরের ঐতিহ্যবাহী ইউ অক্ষর আকৃতির বাওড় মর্শ্বিণাকে ইকোপার্ক করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের প্রায় ৫২ একরের এ জলাশয়কে ঘিরে প্রশাসনের উদ্যোগে আকর্ষণীয় ইকোপার্ক নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে দেশী-বিদেশী পর্যকটদের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠবে গোটা এলাকা। ইতোমধ্যে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনাও উপজেলা থেকে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার মাধ্যমে সংশিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে বলে উপজেলা বন বিভাগ নিশ্চিত করেছে।
জানা গেছে, উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের কড়িয়াখালি গ্রামের পাশে প্রায় ৫২ একর সরকারি জলাশয় রয়েছে। এলাকায় এটি বাওড় মর্শ্বিণা নামে পরিচিত। দীর্ঘ বছর ধরে ওই বাওড়ে দেশি প্রজাতির মাছ উৎপাদন হতো। এ বাওড়ে মাছ শিকার করে এলাকার প্রায় দুই হাজার জেলে পরিবার জীর্বিকা চালাতো। কিন্তু, সরকারের দেখভালের অভাবে অযতœ ও অবহেলায় বাওড়টি তার অতীত ঐতিহ্য হারাতে বসেছিল। এমন সময় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক উপজেলার বৃহত্তর ওই জলাশয়টিকে ইকোপার্ক করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
এলাকাবাসী জানায়, বহুদিন থেকে বিনোদন প্রিয় এবং ভ্রমণ পিপাসু মানুষ পরিবার পরিজন নিয়ে নির্জন এ বাওড়ে বেড়াতে আসতো। এ বাওড়কে ঘিরে ইকোপার্ক নির্মাণ হলে পর্যকটরাও চিত্তবিনোদনে এখানে বেড়াতে আসবেন। পর্যটকদের আগমনে আবার এলাকার পরিবেশ মুখোড়িত হয়ে উঠবে।
বাওড়ের পাশের কড়িয়াখালী গ্রামের আব্দুল মতলেব শেখ (৭০) জানান, তিনি ছোট কালে বাওড়টি অনেক প্রস্থ দেখেছেন। এখন বাওড়ের পাশ দিয়ে বেঁড়ি তৈরি হওয়ায় জলাশয়টি ছোট মনে হয়। এখানে ইকোপার্ক নির্মাণ হলে এলাকার পরিবেশ উন্নত হবে। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আগমনে এলাকার মানুষের সুস্থ্য সাংস্কৃতিক মননশীলতাও বৃদ্ধি পাবে।
উপজেলা বন বিভাগ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, উপজেলা সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে উত্তর-পশ্চিম কোনে খাস খতিয়ানভুক্ত প্রায় দুই কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ২৫০ মিটার প্রস্থের ইংরেজি ইউ অক্ষর আকৃতির প্রায় ৫২ একর জমিতে অবস্থিত বাওড়টি। প্রকৃতির নান্দনিক সৌন্দর্য উপভোগের স্থান হিসেবে বাওড় মর্শ্বিণায় ইকোপার্ক করার জন্য চারটি গোলাকার ঘর, রেস্ট হাউজ, পার্কিং জোনের সঙ্গে ওয়াশ রুম, অত্যাধুনিক কনফারেন্স রুম, গেট, টিকিট ঘর, বাইডার বোর্ড, প্যাটেল বোর্ড, মাছ ধরার মাচাং, চিলড্রেন কর্নার, মুক্ত মঞ্চ, ওয়াচ টাওয়ার, পিকনিক সেড ও লিংক রোডসহ ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নানা ধরনের প্রস্তাবনা উপজেলা থেকে সংশিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে।
যশোরের সহকারি বিভাগীয় বন কর্মকর্তা অমিতা মন্ডল জানান, প্রস্তাবনাটি মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে। পাশ হলেই কাজ শুরু হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিজানূর রহমান বলেন, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে বাওড় মর্শ্বিণায় ইকোপার্ক করা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ ছাড়ের পরেই ইকো পার্কের কার্যক্রম শুরু করা হবে।
কেশবপুরের মর্শ্বিণা বাওড়কে বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/