Site icon suprovatsatkhira.com

কালিগঞ্জে আ’লীগ নেতা মোসলেম হত্যা মামলার আইও পরিবর্তন ও বিএনপি নেতা শিমুলকে গ্রেফতারের দাবিতে সংবাদ সস্মেলন

ডেস্ক রিপোর্ট: কালিগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা মোসলেম আলী হত্যা মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা পরিবর্তন ও আসামি বিএনপি নেতা শিমুলকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেওয়ার দাবিতে সংবাদ সস্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সস্মেলন করে কালিগঞ্জ উপজেলার চাঁচাই গ্রামের মৃত মোসলেম আলীর স্ত্রী আফরোজা পারভিন এই দাবি জানান। সংবাদ সস্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন মৃত মোসলেম আলীর পালক ছেলে জাকির হোসেন মোল্লা।
আফরোজা সুলতানা সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানান, তার স্বামী মোসলেম আলী বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার কালিগঞ্জ শাখার সভাপতি হিসেবে মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে গেছেন। ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর যুদ্ধাপরাধী রাজাকার জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার ফাসির রায় কার্যকরের পর কালিগঞ্জসহ দেশজুড়ে জামায়াত শিবির ও বিএনপি’র নেতা কর্মীরা নাশকতার লক্ষ্যে হত্যা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ শুরু করে। এরই অংশ হিসেবে ওই বছরের ১৭ ডিসেম্বর কালিগঞ্জের মুকুন্দ মধুসুধনপুর চৌমুহুনীতে মুকুন্দ মধুসুধনপুর গ্রামের লুৎফর রহমান গাইনের ছেলে বিষ্ণুপুর ইউনিয়ন বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক চারটি নাশকতা মামলার আসামি হাফিজুর রহমান শিমুলের নেতৃত্বে তার স্বামীকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। শোকে মুহ্যমান থাকা অবস্থায় তড়িঘড়ি করে ঘটনার রাতেই তিনি বাদী হয়ে হাফিজুর রহমান শিমুলসহ ২৪জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ২৫ জনের নামে থানায় মামলা করেন। পরবর্তীতে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে তার পালক ছেলে জাকির হোসেন এজাহার নামীয় ২৪ জনসহ ৪৩ জনের নামে আদালতে সম্পুরক মামলা দায়ের করেন। বিচারক থানায় দায়েরকৃত মামলাটি পুলিশ প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত কার্যক্রম স্থগিত করেন। ২০১৪ সালের ২২ মে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক নকীব অয়জুল হক তদন্ত শেষে হাফিজুর রহমান শিমুলের নাম বাদ দিয়ে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। আদালতে নারাজির আবেদন খারিজ হলে তিনি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রিভিশন করেন। চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক এমএ হামিদ তা মঞ্জুর করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নিম্ন আদালতে পাঠিয়ে দেন। আদালতের নির্দেশে মামলাটি কালিগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক রাজীব হোসেন তদন্ত শুরু করেন। শুরুতেই তিনি আসামি সাংবাদিক হাফিজুর রহমান শিমুলের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে একইসঙ্গে অবস্থান করায় পুলিশ সুপার মহোদয়ের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি যথাযথ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল দেবহাটা থানার নতুন ভবন উদ্বোধন করতে এলে বিষয়টি তাকে অবহিত করলে তিনি খুলনা রেঞ্জের ডিআইজিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণের নির্দেশ দেন। এরপরও হাফিজুর রহমান শিমুলের সঙ্গে সখ্যতা বজায় রাখার বিষয়ে প্রতিবাদ করলে তিনি হাফিজুরকে নিরীহ দাবি করে তার বিরুদ্ধে কিছুই করা যাবে না বলে জানিয়ে দেন।
আফরোজা আরো বলেন, মামলার যথাযথ তদন্ত হচ্ছে না এমন অভিযোগ করতে গত ১৯ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় তার পালক ছেলে জাকির হোসেন বন্ধু আইয়ুব আলীকে নিয়ে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের অভ্যর্থনা কক্ষে গিয়েও তার সাথে দেখা করতে পারেননি। এমতাস্থায় তিনি তার স্বামী হত্যা মামলার যথাযথ তদন্ত হবে বলে বলে মনে করছেন না। এজন্য তদন্তকারি কর্মকর্তার পরিবর্তন জরুরী। হাফিজুর রহমান শিমুলকে গ্রেফতার করে তাকে রিমান্ডে নিলে এ হত্যার নেপথ্য মদতদাতা ও অর্থযোগান দাতাদের নাম বেরিয়ে আসবে বলে তিনি মনে করেন।
সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে হাফিজুর রহমান শিমুলকে গ্রেফতার ও মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা পরিবর্তনের বিষয়ে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা রাজীব হোসেন জানান, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে পরামর্শ ও তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version