এম ওসমান: কোরবানির পশুর চামড়া পাচার ঠেকাতে সাতক্ষীরাসহ যশোরের বেনাপোল ও শার্শা সীমান্তে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিজিবি। সীমান্ত এলাকাগুলোতে টহল জোরদারের পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হয়েছে। চামড়া চোরাচালানের সঙ্গে জড়িতদের তালিকা তৈরি করে তাদের কঠোর নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি চামড়াবোঝাই কোনো ট্রাক সীমান্ত অভিমুখে যেতে দেয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন বিজিবি ও পুলিশের কর্মকর্তারা। ঈদের দিন সকাল থেকে পরবর্তী এক মাস এই ঘোষণা জারি থাকবে বলে জনিয়েছেন সংশ্লি¬ষ্ট কর্মকর্তারা।
চামড়া ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ বছর ট্যানারি মালিকরা সিন্ডিকেট করে চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করেছেন ঢাকার বাইরে প্রতি বর্গফুট ৩৫-৪০ টাকা, খাসির চামড়া ১৮-২০ টাকা, বকরির চামড়া ১৩-১৫ টাকা। যদিও পাশের দেশে চামড়ার দাম বেশি। বাংলাদেশ থেকে কম দামে চামড়া কিনে সীমান্ত পার করলেই বেশি দামে বিক্রি করা সম্ভব। এ লক্ষ্যে উভয় দেশের সীমান্তে পাচারকারী চক্রগুলো সক্রিয় রয়েছে। সুযোগ বুঝে এসব চামড়া ভারতে পাচার করে দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দেশের চাহিদার মোট চামড়ার মধ্যে কোরবানি ঈদে ৪০ শতাংশ সংগ্রহ করা হয়। বাকি ৬০ শতাংশ কাঁচা চামড়া সংগ্রহ হয় বছর জুড়ে।
চামড়ার ব্যবসায়ীদের মতে, পাশের দেশের চেয়ে বাংলাদেশের চামড়ার গুণগত মান ভালো। প্রতিবেশী দেশের পশুর চামড়া নিম্নমানের বিধায় দেশি চামড়ার সঙ্গে মিশিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে রফতানি করা হয়। চোরাকারবারীরা প্রতিবেশী দেশে চামড়া পাচার করে ওই অর্থ দিয়ে ভারত থেকে অন্যান্য মালামাল কেনে। যশোর সীমান্তবর্তী অঞ্চল হওয়ায় এখান থেকে খুব সহজে ভারতে চামড়া পাচার করা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চামড়া ব্যবসায়ী এক নেতা বলেন, যশোর ও তার আশপাশের সীমান্ত দিয়ে চামড়া পাচার হতে পারে সেসব স্থানের মধ্যে বেনাপোল, শার্শা, ঝিকরগাছা, সাতক্ষীরা ও কলারোয়া সীমান্ত উলে¬খযোগ্য।
তিনি বলেন, চামড়ার দাম সঠিকভাবে নির্ধারণ করলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বস্তি থাকে। ফলে পাচার হওয়ার আর সম্ভাবনা থাকে না। তিনি চামড়ার সঠিক দাম নির্ধারণের জন্য ট্যানারি মালিকদের প্রতি আহবান জানান।
বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সালেহ মাসুদ করিম বলেন, চামড়া পাচার রোধে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সীমান্তে কড়া নজর রাখা হয়েছে। প্রাম পুলিশ, আনসারসহ সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে যাতে একটি চামড়াও পাচার হতে না পারে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র যশোর-২৬ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফুল হক বলেন, চামড়া পাচার প্রতিরোধে সীমান্তে কড়া সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে বিজিবিকে। ফলে পাচারকারীরা সুবিধা করতে পারবে না।
তিনি বলেন, চামড়া যাতে পাচার না হতে পারে সেজন্য প্রতি হাটে বিজিবির পক্ষ থেকে কড়া নজরদারি রাখা হয়েছে। চামড়া হাটগুলো থেকে ব্যবসায়ীরা যাতে চামড়া ফেরত নিয়ে আসতে না পারে সে ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। প্রধান সড়ক ছাড়া কোন আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে যাতে চামড়া আনা-নেয়া না করতে পারে সেজন্য সতর্ক রয়েছে বিজিবি।
সীমান্তে চামড়া পাচার রোধে সতর্ক বিজিবি
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/