সমীর রায়: আশাশুনির শ্রীউলা ইউনিয়নের থানাঘাটায় খোলপেটুয়া নদীর ভাঙনকবলিত বেড়িবাঁধ রোববার রাতে অনেক কষ্টে বাধা সম্ভব হলেও তা রাতের জোয়ারেই ফের নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে নতুন করে পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। মাড়িয়ালা মাধ্যমিক বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত ১৫টি পরিবার। বেড়িবাঁধের উপরে আশ্রয় নিয়েছে অসংখ্য মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, রোববার (১২ আগস্ট) গভীর রাত পর্যন্ত এলাকাবাসী জেনারেটর চালিয়ে বাঁশের খাঁচা করে মাটির বস্তা ফেলে থানাঘাটার ভাঙনকবলিত বাঁধটি বাধতে সক্ষম হলেও শেষ রক্ষা হয়নি। রাতে খোলপেটুয়া নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারের তাণ্ডবে চোখের নিমিষেই বাধটি ফের নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে নতুন করে পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে অসংখ্য মাছের ঘের। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে সহস্রাধিক পরিবার। কোটি কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে চিংড়ি ব্যবসায়ীরা।
এদিকে, সোমবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে উপজেলা চেয়ারম্যান এবিএম মোস্তাকিম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাফ্ফারা তাসনীন, পাউবো’র এসও আবুল হোসেন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সেলিম খান ক্ষতিগ্রস্ত বাধটি পরিদর্শন করেছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান উপস্থিত ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্বস্ত করে বলেন, আগামী ২-১ দিনের মধ্যে যে করে হোক বাঁধটি মেরামত করে পানি আটকে দেয়া হবে।
সরকারি হিসেব মতে, বাঁধ ভেঙে নয় গ্রামের প্রায় সাড়ে ৪’শ পরিবার সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে আছে থানাঘাটা, বকচর, বিলবকচর, হাজরাখালী, মাড়িয়ালা, ঢালিরচক, বুড়াখারআটি, দক্ষিণ পুইজালা ও মহিষকুড় গ্রাম। রাতের জোয়ারে নতুন করে আশাশুনি সদর ইউনিয়নের মধ্যেও পানি ঢোকার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
পিআইও অফিস সূত্রে জানানো হয়েছে, ইউনিয়নের প্রায় নয় কিলোমিটার এলাকা জুড়ে শতশত মৎস্য ঘের প্লাবিত হয়ে অনেক কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। পরিস্থিতি তুলে ধরে জেলা প্রশাসক বরাবর অনুদান চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা শাকিল জানান, রোববারের সংস্কার করা বাধটি রাতে জোয়ারের পানিতে ভেঙ্গে গেছে। সোমবার দিনভর এলাকাবাসীকে নিয়ে বাঁশের খাচা তৈরি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ই আগস্ট) ভাটার সময় আবারো মাটি ফেলে বাঁধটি সংস্কার করা হবে। তিনি আরো জানান, রাতে জোয়ারের পানি ঢুকে ইউনিয়নের মোট ১৩টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াপদায় আশ্রয় নিয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে আমরা তাদের শুকনো খাবর দিয়েছি।
ফের নদী গর্ভে বিলীন খোলপেটুয়ার বাঁধ
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/