আবিদ হাসান: সাতক্ষীরায় ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মিথ্যা মামলা দায়ের করায় মামলার বাদী আনু ওরফে নাজমা আক্তারকে তিন বছরের সশ্রম কারাদ- ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদ- প্রদান করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (২৮ আগস্ট) বিকালে সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হোসনে আরা আক্তার এ রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্ত আনু ওরফে নাজমা আক্তার শহরের পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকার মৃত আব্দুল গফুরের মেয়ে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, আনু ওরফে নাজমা আক্তার ২০১১ সালের ২৩ আগস্ট একই এলাকার নুর আলী শেখের ছেলে কামরুল ইসলামের (৫০) বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আসামি কামরুল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এতে দীর্ঘ এক মাস কারাভোগের পর ওই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর জামিন পান তিনি। দীর্ঘ এক মাস কারাভোগের কারণে তাকে সাতক্ষীরা সিটি কলেজের লাইব্রেরিয়ান পদ থেকে সায়মিক বহিষ্কার করা হয়। এরই মধ্যে এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মনোয়ারা খাতুন তদন্ত শেষে ঘটনার সাথে আসামি কামরুলের সম্পৃক্ততা না থাকায় আদালতে ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল করেন।
এ রিপোর্টের বিরুদ্ধে বাদী নাজমা আক্তার পরদিন আদালতে নারাজি দেন। একপর্যায়ে আদালত তার নারাজি আমলে নিয়ে আবারও মামলাটি তদন্ত করে রিপোর্ট দেয়ার জন্য তৎকালীন ওসি (তদন্ত) আমিনুল ইসলামকে দায়িত্ব দেন। তিনি দীর্ঘ তদন্ত শেষে এ ঘটনায় আসামি কামরুলের জড়িত থাকার কোন প্রমাণ না পাওয়ায় তিনি ২০১২ সালের ১৮ নভেম্বর আদালতে তার বিরুদ্ধে ফাইনাল রিপোর্ট দাখিল করেন এবং একই সাথে মামলার বাদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আদালতের কাছে লিখিত আবেদন জানান।
আদালত তার রিপোর্ট পেয়ে আসামি কামরুলকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেন। পরবর্তীতে ২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি কামরুল একই আদালতে নাজমা আক্তারের বিরুদ্ধে ১৭ ধারায় একটি পাল্টা মামলা করেন।
এ মামলায় মঙ্গলবার পাঁচজনের সাক্ষ্য গ্রহণ ও নথি পর্যালোচনান্তে নাজমা আক্তারের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে তিন বছরের সশ্রম কারাদ- ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদ- প্রদান করেন।
সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট জহুরুল হায়দার বাবু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আসামি নাজমা আক্তার পলাতক রয়েছে।