মীর খায়রুল আলম, দেবহাটা: দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যানিটারি ইন্সপেক্টর অমল চন্দ্র মণ্ডলের বিরুদ্ধে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও হাট-বাজারে ভেজাল খাদ্য, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, লাইসেন্স নবায়ন ও নতুন লাইসেন্স প্রদানের নামে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী একটি মুদি দোকানীর কাছ থেকে লাইসেন্স নবায়ন ফি বাবদ বার্ষিক দুই’শ ৫০ টাকা আদায় করার কথা থাকলেও আদায় করা হচ্ছে সাত’শ থেকে এক হাজার টাকা। বড় ও মাঝারি ধরণের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে লাইসেন্স নবায়ন অথবা নতুন লাইসেন্স ফি হিসেবে দুই হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করছেন। এছাড়া পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও খাদ্যের ভেজাল পরীক্ষা নিরীক্ষা না করে প্রতি মাসে ব্যবসায়ীদের থেকে মোটা অংকের টাকা আদায় করছেন তিনি। তিনি যে টাকা দাবি করেন তা দিতে কোনো ব্যবসায়ী অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর ভয় দেখানো হয়।
এদিকে, দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যানিটারি ইন্সপেক্টর অমলের বিরুদ্ধে ২০১২ সালে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ আদায়ের বিষয়ে পত্রপত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে ২০১৩ সালে তাকে শ্যামনগর উপজেলায় বদলি করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে সেখান থেকে এক বছর পর বিভিন্ন মহলে দেনদরবার করে পুনরায় তিনি সখিপুর হাসপাতালে যোগদান করেন। এরপর শুরু হয় আবারো অমলের রাজত্ব। সে সময় থেকে এ পর্যন্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও হাট-বাজারে ভেজাল খাদ্য, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে কোন অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় নি। এছাড়া ভেজাল খাদ্য, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানের আগেই ব্যবসায়ীদের তিনি সতর্ক করে দেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে ফুলবাড়িয়ায় দুইটি, চালতেতলায় দুইটি, পাতাখালিতে একটি, পারুলিয়া বাজারে ১৮টি, সখিপুর বাজারে ৪৫টি, ধোপডাঙ্গায় চারটি, পাচপোতায় একটি, সখিপুর মোড়ে নয়টি, কামটায় তিনটি, ঈদগা বাজারে ১৪টি, মাঘরীতে তিনটি, চন্ডিপুরে চারটি, দেবহাটায় ১৫টি, সুশিলগাঁতীতে তিনটি, টাউনশ্রীপুর ১১টি, চর শ্রীপুরে দুইটি, রহিমপুরে দুইটি, পাতাখালিতে একটি, ঘলঘলিয়ায় পাঁচটি, ভাতশালায় একটি, চাদপুরে দুইটি, নাংলায় সাতটি, হাদিপুরে সাতটি, কুলিয়ায় ৯১টি, সুবর্ণাবাদে ১০টি, টিকেটে আটটি, কোমরপুরে পাঁচটি, সেকেন্দ্রায় পাঁচটি, গরুরহাটে তিনটিসহ মোট ৩৮২টি হোটেল, মুদিখানা, বেকারী, ভ্যরাইটিস, চানাচুর ফ্যাক্টরি, আইসক্রিম ফ্যাক্টরি, মাছের আড়ৎ, মৎস্য ডিপোসহ কাঁচা-পাঁকা ফল ও খাবারের দোকানে লাইসেন্স নবায়ন করা হয়েছে। তবে উপজেলায় রয়েছে কয়েক শত দোকান। যার অধিকাংশতে লাইসেন্স নেই। এছাড়া লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠান থেকে সুবিধা গ্রহণ করায় তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হয় নি।
এ ব্যাপারে অমল চন্দ্র মন্ডলের ব্যবহৃত নাম্বারে কল দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে ডিস্ট্রিক্ট স্যানিটারি ইন্সপেক্টর রথিন্দ্র নাথ বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দেবহাটায় স্যানিটারি ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/