Site icon suprovatsatkhira.com

কপিলমুনির সর্বত্র মাদকের ছড়াছড়ি

জি এম মোস্তাক আহমেদ, কপিলমুনি: খুলনার ঐতিহ্যবাহী বাণিজ্যিক উপ-শহর কপিলমুনি মাদকদ্রব্যে ছেয়ে গেছে। মাদকের ভয়াল ছোবলে কপিলমুনি তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। কতিপয় চিহ্নিত অসাধু ব্যক্তির কারিশমায় মাদকদ্রব্য আমদানি হলেও এ ব্যাপারে প্রশাসনের কোন মাথাব্যথা নেই। পুলিশ ও স্থানীয় কিছু বখাটে যুবকের সাথে মাসিক চুক্তির বিনিময়ে নির্বিঘেœ চলছে মাদকের রমরমা ব্যবসা। ফলে উপ-শহর জুড়ে যত্রতত্রই দেখা মিলছে ফেনসিডিলের পড়ে থাকা খালি বোতল। এতে করে একদিকে যেমন যুবসমাজের চরম অবক্ষয় দেখা দিয়েছে তেমনি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছে অভিভাবক মহল। এ ব্যাপারে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কপিলমুনির বালুর মাঠ, কালীবাড়ীঘাট, শ্রীরামপুর সাহাপাড়া রোড, কলেজ লেক, পালপাড়া রোড, কাশিমনগর ও প্রতাপকাটী এলাকায় বিভিন্ন খোলা স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকা ফেনসিডিলের খালি বোতল দেখে সহজেই বোঝা যায় ফেনসিডিল তথা মাদকের ভয়াবহতা কতটাই প্রকট। বর্তমানে কপিলমুনি মাদকের ভয়াল ছোবলের কবলে পড়ে অতীত ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। আর এই মাদকদ্রব্য সিন্ডিকেট চালাচ্ছে পুলিশের কতিপয় অসাধু কর্তাব্যক্তি ও এলাকার কিছু বখাটে যুবক। এর সাথে জড়িত রয়েছে পুলিশের ক্যাশিয়ারও। ফলে অসাধু ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন ফেনসিডিল, গাঁজা, হেরোইন, প্যাথিডিন, অ্যালকোহলের (স্পিড) ব্যবসা করে শীর্ষে অবস্থান করছে। তবে প্রভাবশালী ও মধ্যবিত্ত পরিবারের যুবকরা সরাসরি ফেনসিডিলের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, এই মাদকের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েছেন কতিপয় শিক্ষক।
সূত্রে জানা যায়, ফেনসিডিলের সাথে সম্পৃক্ত যুবকদের সাথে মাঝে মধ্যে পুলিশ ও এলাকার বখাটে যুবকদের সখ্যতা ও মেলামেশা করতে দেখা যায়। কারণ ঐ সব মাদকসেবী ও বিক্রেতাদের সাথে তরা প্রায়ই উঠাবসা করে থাকে। আর এ সুযোগে মাদক বিক্রেতারা দীর্ঘদিন যাবৎ বাজারের অলিতে-গলিতে মাদক বিক্রি করে আসছে। বর্তমানে উল্লিখিত স্থানগুলোতে এর ভয়াবহতা এতটাই প্রকট আকার ধারণ করেছে যে স্কুল কলেজ পড়–য়াসহ যুব সমাজ ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে। এতে করে অভিভাবক মহলে দেখা দিয়েছে চরম হতাশা। এ ব্যাপারে খুলনা পুলিশ সুপারের জরুরী হস্তক্ষেপ চেয়েছেন এলাকার অভিভাবকসহ সচেতনমহল।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি খুলনা ডিবি পুলিশ কর্তৃক কপিলমুনি এলাকায় মাদকের উপর বিশেষ অভিযানের সময় মাদকের তালিকাভুক্ত ব্যবসায়ীরা বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্যসহ আটক হলেও তাদের রক্ষিত মাদক ভা-ার এখন নিয়ন্ত্রণ করছে তাদের সতীর্থরা। আর এর সাথে যুক্ত রয়েছে স্থানীয় ফাঁড়ি পুলিশের কিছু অসাধু কর্তারা। প্রশাসনকে মাসোয়ারা দিয়ে এক প্রকার জিম্মি করে তারা নির্বিঘেœ আবারো কপিলমুনিকে মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে বলে এলাকাবাসী ও সচেতন মহলের দাবি।
তাদের প্রশ্ন, কপিলমুনি সদরের পুলিশ ফাঁড়ি থাকা সত্ত্বেও এখান থেকে প্রায় ৫৪ কি. মি. দূরে অবস্থিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ টিম খুলনা ডিবি পুলিশ এসে এলাকা থেকে মাদক উদ্ধার করলেও স্থানীয় ফাঁড়ি পুলিশ সার্বক্ষণিক কপিলমুনিতে নিয়জিত থেকেও মাদক উদ্ধারে তাদের কেন এত অনীহা তা আমাদের বোধ্যগম্য নই।
এদিকে এলাকার সচেতন মহল মাদকের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নাম পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পুলিশ পরিদর্শক) রফিকুল ইসলামের কাছে গোপনে তথ্য দিলে তাদেরকে ধরা তো দূরের কথা উল্টা গোপনে তথ্যদাতার নাম মাদক ব্যবসায়ীদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। যার ভুক্তভোগী এলাকার অনেকেই।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version