এস.এম নাহিদ হাসান: দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ৯নং ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মাছখোলা ক্লাব মোড়-হাটখোলা সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কটি সংস্কারে কোন উদ্যোগ না নেওয়ায় দুর্ভোগে নাকাল হয়ে পড়েছে মানুষ। সড়কটির অবস্থা এতোই নাজুক যে, পুরো সড়কের কোথাও পিচের চিহ্ন নেই। পিচ, ইট, বালু ও খোয়া উঠে খানাখন্দকে ভরা। সামান্য বৃষ্টিতেই খানাখন্দে পানি জমে মৃত্যুকূপে পরিণত হয়। ফলে এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী চার-পাঁচ গ্রামের হাজার হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত ভোগান্তির সম্মুখীন হচ্ছে। বছর দশেক আগে সড়কটি সংস্কার করা হলেও গত বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার কারণে কিছু দিনের মধ্যেই তা নষ্ট হয়ে যায়।
সম্প্রতি মাছখোলা ক্লাব মোড় থেকে মাছখোলা হাটখোলা বাজার পর্যন্ত ঘুরে সড়কের এমন বেহাল দশা চোখে পড়ে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন মাছখোলাসহ পার মাছখোলা, দামার পোতা, জিয়ালা, বাগডাঙ্গী, গোবিন্দপুর গ্রামের হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, মাছখোলা বাজারের পাশে কয়েকটি ইটের ভাটা আছে। ভাটায় চলাচল করা ট্রলি, ট্রাক্টারের সুবিধার জন্য ভাটার মালিকদের পক্ষ থেকে বছর খানেক আগে এ সড়কে ইট বিছিয়ে দেয়া হয়। জেলা শহরে উঠার একমাত্র এই সড়কটি নিয়ে কর্তৃপক্ষের যেন কোন মাথা ব্যথা নেই।
ভ্যান চালক আফাজ উদ্দিন বলেন, সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। প্রতিবছর জলাবদ্ধতায় সড়কটি পানির নিচে থাকে। পানি সরে গেলে ট্রলি, ট্রাকসহ ভারী যান চলাচলের কারণে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়। এতে করে সড়কটি দিয়ে পায়ে চলাচলা করাও কষ্টকর হয়ে পড়ে।
কলেজ ছাত্র আজিজুর রহমান বলেন, সড়কটির এ দশার কারণে ঠিক মত ভ্যান পাওয়া যায় না। কলেজ মোড় থেকে মাছখোলা বাজার পর্যন্ত ১০টাকা ভাড়া হলেও রাস্তা খারাপ হওয়ায় ৩০ থেকে ৪০ টাকা ভ্যান ভাড়া দিয়ে চলাচল করতে হয়। জেলা শহরের পাশের ইউনিয়নের এমন বেহাল সড়কের কথা কল্পনা করা যায় না। বৃষ্টির সময় তো মানুষের ভোগান্তি চরম পর্যায়ে চলে যায়। হাটু সমান পানিতে মানুষকে চলাচল করতে হয়।
পার মাছখোলা গ্রামের কৃষক সুলতান গাজী বলেন, মাছখোলার সড়কটি প্রতিবছর তলিয়ে যায়। সংস্কার করার কোন মানুষ নেই। চেয়ারম্যান মেম্বররা ভোটের আগে এসে সব ঠিক করে দেবে বলে কথা দেয়। কিন্তু ভোটের পরে আর খোঁজ থাকে না। সড়কটি উঁচু করে পুনরায় তৈরি না করলে আবারো কিছু দিন পর তলিয়ে যাবে। তাই কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন দ্রুত সকড়টি উঁচু করে নির্মাণ করা হোক।
এ ব্যাপারে ৯নং ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, সড়কটি নিয়ে আমরা বেশ চিন্তিত। সড়কটি সংস্কারের ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান ও এমপি সাহেব জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ঢাকা থেকে লোক এনে সড়কটি পরিদর্শন করানো হয়েছে। সকল কাগজপত্র ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
সাতক্ষীরা-২ আসনের এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি বলেন, সড়ক সংস্কারের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সড়কটি উঁচু করে তৈরি করা হবে, যাতে পানিতে এ এলাকার মানুষের চলাচলে কোন সমস্যা না হয়।