Site icon suprovatsatkhira.com

মণিরামপুরে লাবণী হত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল

মণিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি: মণিরামপুরে অনার্স পড়–য়া নববধূ লাবণী দাসকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগ তুলে স্বামী পরেশসহ জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিকে লাবণী হত্যার ঘটনায় বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর নানা তথ্য। ঘটনার পর নিহতের পরিবারে শোকের মাতম থাকায় গণমাধ্যম কর্মীরা নেপথ্যের অনেক ঘটনা জানতে না পারলেও নিহতের পিতা-মাতাসহ অনেকের কাছ থেকে এখন নানা তথ্য মিলছে।
মোটা অংকের যৌতুক দাবিসহ নানা কারণে লাবণীকে হত্যা করা হয়েছে। অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে নিহত লাবনীর পিতাসহ স্বজনরা প্রকাশ্যে অভিযোগ করেছেন, ঘটনার পর জড়িতদের নামে থানায় হত্যা মামলা করতে গেলেও পুলিশ তা নেয়নি।
নিহতের পিতা স্বপন দাস ও কাকা সুবাস দাস জানান, ঘটনার দিন সন্ধ্যার দিকে লাবণীর স্বামী পরেশ দাসসহ অজ্ঞাতনামা কিছু ব্যক্তি দু’টি মাইক্রোযোগে তাদের নেহালপুর ঋষি পল্ল¬¬ীতে আসে। যা এলাকার বিভিন্ন স¤প্রদায়ের অনেকেই দেখেছেন। ওই রাতেই আবার মাইক্রো দু’টি ফিরে যায়। পরের দিন বুধবার সকালে খবর আসে লাবণীর মরদেহ পরেশদের ঘরের আড়াই ঝুলছে। খবর পেয়ে পুলিশ ও এলাকার লোকজন তাদের বাড়িতে আসলেও দু’একজন মহিলা ছাড়া ওই বাড়িতে কোন পুরুষ লোক ছিল না।
এ সময় দেখা যায় মৃত অবস্থায় লাবণী ঘরের আড়ার সাথে ঝুললেও তার পা দু’টি রয়েছে মাটিতে। এর পরেও লাবণীর স্বামী ও পরিবারের কিছু লোকজন অপপ্রচার চালাতে থাকে সে আত্মহত্যা করেছে। নিহতের গলায় কয়েকটি দাগসহ হাতে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় পুলিশ তার লাশ নিয়ে যায়। নিহত লাবনীর মা লিপিকা দাস কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, অন্য স্থানে তার মেয়ের বিয়ের আয়োজন ঠিক-ঠাক থাকার মধ্যেই পরেশ তাকে নানা প্রলোভন দিয়ে নিয়ে যায়। এর পরে আর আমার মেয়েকে দেখতে পায়নি। বিয়ের আঠারো দিনের মাথায় আমার মেয়েকে মেরে ফেললো ওরা।
তিনি আরো বলেন, মৃত অবস্থায় লাবণীর মুখের মধ্যে রুমাল ও ভাঙ্গা কলম ছিল। আমার মেয়েকে পরেশ দাস তার ভাই গোলক দাস, বোন চায়না এবং পিতা গৌর দাসসহ অন্যান্যরা মেরে ফেলেছে। নিহত লাবণীর পিতা স্বপন দাস দাবি করেন, তার মেয়েকে বিয়ের পর পরেশ তাদের কাছে প্রথমে দুই লাখ ও তার কয়েকদিন পর পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। যৌতুকের টাকা না দিলে আমার মেয়ের ক্ষতিসহ নানা ধরনের হুমকি দেয় পরেশ। লাবণীকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার পর পুলিশকে জানানো হয়। ওই সময় পুলিশ যদি আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করতো তাহলে আমাদের মেয়েকে এভাবে জীবন দিতে হতো না।
নিহতের চাচা সুভাষ দাস জানান, ইতোপূর্বে পরেশ যশোর এমএম কলেজে পড়া অবস্থায় যশোরের দুইজনসহ পাঁচ মেয়ের জীবন নষ্ট করেছে। এছাড়া তাদের ঋষি পল্ল¬ীর কয়েকজন মেয়েকে খারাপ প্রস্তাব দেয়াসহ এক মেয়েকে নিয়ে পরেশের বিরুদ্ধে শালিস হয়েছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে পরেশের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। পরে তার মুঠোফোন ০১৯৪৭-৮৫৩৮৫৭ নম্বরে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেন।
এদিকে লাবণীকে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে এবং পুলিশ মামলা নেয়নি ও পরেশসহ জড়িত অন্যান্যদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) উপজেলার নেহালপুর এলাকায় মানববন্ধন-বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ঋষি পল্লীর নারী-পুরুষ এবং শিশু-কিশোররাসহ স্থানীয় অনেকেই অংশ নেয়। এ ব্যাপারে মণিরামপুর থানার ওসি মোকাররম হোসেন বলেন, কাউকে থানা থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়নি। যেহেতু লাবণী নিহতের ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে, তার কারণে ময়না তদন্ত রিপোর্ট হাতে আসার পর পরবর্তী আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version