মীর খায়রুল আলম, দেবহাটা: দেবহাটার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের পানির কল হতে নাংলা অভিমুখে সড়কের মেটোখালি ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশের মরা গাছের ডাল ভেঙে পড়ছে। এতে স্থানীয় বসবাসকারী ও পথচারীরা এই রাস্তা দিয়ে চলাচলে আতংকে রয়েছে। এ ব্যাপারে দ্রæত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নওয়াপাড়া ইউনিয়নের পানির কল নামক স্থান থেকে মেটোখালি ব্রীজ পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কের দু’পাশে বন বিভাগের অর্ধশতাধিক শিশু গাছ পোকার আক্রমণে মারা গেছে। আর এসব বৃহৎ গাছের ডাল রাস্তায় ও বসতবাড়ির চালের উপর ভেঙে পড়ছে। এতে পথচারী ও স্থানীয়রা আহত হওয়াসহ অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমনকি ডাল ভেঙে বৈদ্যুতিক তার ছিড়ে যাওয়ায় দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনা নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে এলাকাবাসী এখন এই পথে ভয়ে ভয়ে যাতায়াত করছে। এমনকি জগন্নাথপুর, নাংলাসহ আশেপাশের জনসাধারণের জন্য এই রাস্তা হুমকিতে পরিণত হয়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ বিষয়টি সমাধানে ব্যাপারে বার বার কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ ও লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন প্রকার অগ্রগতি হয় নি।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, কয়েকদিন আগে রাত সাড়ে ৮টার দিকে হঠাৎ মস্তবড় একটি মরা গাছের ডাল আমাদের টিনের চালের উপর ভেঙে পড়ে। তখন আমি বাড়িতে ছিলাম না। আমার স্ত্রী ও দুই সন্তান সে সময়ে ঘরের ভিতর ছিল। বিকট শব্দে তারা আতঙ্কিত হয়ে যায়। পাশের মসজিদের মুসল্লিরা তাদেরকে উদ্ধার করে আমাকে খবর দেয়। আমি দ্রæত বাসায় এসে দেখি আমার ঘরের চাল দুমড়ে মুচড়ে গেছে। বিদ্যুতের মিটার মাটিতে পড়ে আছে। সার্ভিস লাইনের তার ছেড়ে ঝুলছে। এতে আমি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এখনো আমার ঘরের উপরে বৃহৎ গাছের সিংহাভাগ রয়েছে যা থেকে ছোট ছোট অংশ ভেঙে পড়ছে। এ ব্যাপারে বহুবার কর্তৃপক্ষের সাথে যোগযোগ করেছি। কিন্তু কোন ফল পাই নি। আমরা প্রতিটা সময় ভয় আর আতংকে দিন কাটাচ্ছি।
একই গ্রামের কয়েকজন বলেন, আমরা খুব ভয়ে দিন পার করছি। সামান্য বাতাস হলে ডাল ভেঙে পড়ছে। আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে খুব বিপদে আছি। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে মরা গাছ কেটে অপসারণের জন্য প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করা হলেও কোন সমাধান পাচ্ছি না। আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে নিরাপদে বাস করতে চাই।
এ ব্যাপারে পানির কল হতে নাংলা অভিমুখে সড়কের বনায়ন কর্মসূচি কমিটির সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান বলেন, প্রায় ২০ বছর আগে বনবিভাগ কমিটির মাধ্যমে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপণ করে। এটি আমরা স্থানীয়ভাবে রক্ষানাবেক্ষণ করি। কিন্তু সাম্প্রতিক পোকার আক্রমণে প্রায় অর্ধশতাধিক গাছ মারা গেছে। আমরা বনবিভাগের সাথে যোগাযোগ করেছি। লিখিতভাবে আবেদন করেও ফল পাচ্ছি না। এতে সরকারি লক্ষ লক্ষ টাকার সম্পদ নষ্ট হচ্ছে সাথে সাথে জানমালেরও ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে।
উপজেলা সামাজিক বনায়ন অফিসার আবুল হাসেম বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আমি বিষয়টি যশোর বন বিভাগ কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তারা বিষয়টি নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এছাড়া যে সব গাছের ডাল ঝুঁকিপূর্ণ সেখান থেকে চিকন ডালগুলো কমিটির মাধ্যমে কেটে ফেলার জন্য বলা হয়েছে। তবে অতি দ্রæত বিষয়টি সমাধান করা হবে।
দেবহাটায় রাস্তার দু’পাশে মরা গাছের ডাল ভেঙে পড়ায় আতংকে মানুষ
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/