Site icon suprovatsatkhira.com

তালায় জমি দখলকারীদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন

সুপ্রভাত সাতক্ষীরা ডেস্ক: তালায় জাল দলিলে জমি দখলকারীদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে উপজেলার খেসরা ইউনিয়নের বিশ্বাসের চক গ্রামের নিরঞ্জন গাইন ও তার ভাতিজা সত্য রঞ্জন গাইন।
রোববার (৫ আগস্ট) সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠকালে তারা বলেন, রাজাপুর মৌজার বিশ্বাসের চকের ৪৭ বিঘা জমি স্বাধীনতা পূর্বকালে আমলনামা দলিলমূলে ক্রয়ের পর থেকে সেখানে চাষাবাদ করে আসছে কয়েকটি পরিবার। কিছুদিন আগে একই জমি অর্পিত সম্পত্তি হিসেবে ঘোষিত হলেও সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করে তা অবমুক্ত করা হয়েছে। অথচ এই জমি ক্রয় করেছে এমন দাবি করে একটি মহল জাল দলিল সৃষ্টি করেছে। তারা এ জমি দখলের পাঁয়তারা করছে। আর এ কাজে তারা পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাদের ব্যবহার করছে।
সংবাদ সম্মেলনে তারা আরও বলেন, আমরা আতংকে রয়েছি। কিছু লোক লাঠিয়াল বাহিনী নিয়ে আমাদের জমি দখলের পাঁয়তারা করছে এমনকি থানায় বসে তারা হুমকিও দিয়েছে জমি দখলের। এই জমির মূল মালিক তালার উমা শশী ভদ্র। স্বাধীনতা পূর্বকালে তার কাছ থেকে এ জমি ক্রয় করেন খিদির বাহাদুর, রামচরন, গনেশ, সন্যাসী ,ভরতসহ আরও সাতজন। তাদের কাছ থেকে সেলে এই জমি ক্রয় করেন বিশ্বাসের চক গ্রামের তিন ভাই অভিলাস গাইন, অম্বিকা গাইন ও অতুল গাইন। তাদের মৃত্যুর পর থেকে তাদের ওয়ারেশগন অর্থাৎ আমরা এ জমি দখল করে আসছি।
সংবাদ সম্মেলনে তারা আরও বলেন, সম্প্রতি সরকার এই জমিকে অর্পিত সম্পত্তি ঘোষণা করে। এর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হলে তা অবমুক্ত হয়। তালার অর্পিত সম্পত্তির প্রত্যার্পন অতিরিক্ত ট্রাইব্যুনাল গত ৮ মার্চ এই রায় দেন। এরই মধ্যে কুমিরা গ্রামের অজিত দে, কাটিপাড়ার সন্তোষ নাথ, মাদরা গ্রামের বাঞ্ছারাম, শাহপুর গ্রামের গান্ডুসহ বেশ কয়েকজন এক জোট হয়ে ওই জমি দাবি করে বলেন তারা তৎকালীন সাতক্ষীরা মহকুমার সাতক্ষীরা থানার শিবপুর ইউনিয়নের খানপুর গ্রামের উমা শশী ভদ্রের কাছ থেকে ওই জমি ক্রয় করেছেন। অথচ খোঁজ নিয়ে দেখা যায় খানপুর গ্রামে উমা শশী ভদ্র স্বামী ধীরেন্দ্র নাথ ভদ্র নামে কেউ সেখানে বসবাস করতেন না। এমনকি কোনো সময়ের ভোটার তালিকায়ও তাদের নাম নেই। এই ভুয়া তথ্যে জাল দলিল করে তার ভিত্তিতে জমি দখলের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ফৌজদারি মামলা করেও হেরে যায় অজিত দে ও তার সহযোগীরা। অবস্থা বেগতিক দেখে কুমিরার অজিত দে নাংলার জয়দেব দত্তর কাছে কিছু টাকার বিনিময়ে কিছু জমি বিক্রি করে দিয়েছে।
শিবপুর ইউপি চেয়ারম্যানের দেওয়া সার্টিফিকেট দেখিয়ে তারা সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, চেয়ারম্যান লিখিতভাবে জানিয়েছেন যে তার ইউনিয়নের খানপুর গ্রামে উমা শশী ভদ্র স্বামী ধীরেন্দ্র নাথ ভদ্র নামে কেউ কখনও বসবাস করতেন না। এমনকি কোনো সময়ের ভোটার তালিকায়ও তাদের নাম নেই। এতে প্রমাণিত হয় যে প্রতিপক্ষ জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে। এর আগে প্রতিপক্ষের দাবি অনুযায়ী অন্য কোনো সার্টিফিকেটও ইউনিয়ন পরিষদ দেয়নি। অথচ এভাবে কয়েকটি জাল দলিল খাড়া করে উক্ত জমি দাবি করছে জয়দেব ও তার সঙ্গীরা। এখন নিজেরা আইনগতভাবে দখলে ব্যর্থ হয়ে তারা ওই জমি মাছ চাষের জন্য বন্দোবস্ত দিয়েছে এই কথা বলে তারা ভাড়াটে লোকজন দিয়ে দখল করানোর চেষ্টা করছে। আর এর পেছনে কলকাঠি নাড়ছেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভালুকা চাঁদপুরের মিজান চৌধুরী। তিনি ও তার ভাই পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি এই ক্ষমতা দেখিয়ে সাতক্ষীরা পুলিশের ওপর প্রভাব সৃষ্টি করছেন। এমনকি পুলিশকে ওই জমি দখল কাজে সহায়তা দেওয়ার জন্য চাপও দিচ্ছেন।
এসময় নিরঞ্জন গাইন আরও বলেন, এর আগে পুলিশের তালা সার্কেল অফিসে ও তালার ইউএনওর কাছে জাল দলিল দেখিয়ে জয়দেব দত্ত জমির জন্য আবেদন করলে তারা বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার বলে ফেরত দিয়েছেন। অপর দিকে সম্প্রতি তালা থানায় জয়দেব দত্ত ফের আবেদন করলে পুলিশ দুই পক্ষকে বসিয়ে জানিয়েছে জমি ভাগাভাগি করে নিতে। যারা জাল দলিল তৈরি করেছে তাদের সাথে তো জমি ভাগাভাগি হতে পারে না। এ জমির মালিক আমরা। আমরা ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই জমি চাষাবাদ করে আসছি। হুট করে জাল দলিল দেখিয়ে এই জমি ভাগাভাগি হবে না। তারা বলেন জাল দলিলের মাধ্যমে মিজান চৌধুরী ভুল তথ্য দিয়ে পুলিশকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করে লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে আমাদের দখলীয় জমি যাতে দখল করতে না পারে সেজন্য তারা সাতক্ষীরার পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version