Site icon suprovatsatkhira.com

খোলপেটুয়ার বেড়িবাঁধ ভেঙে শ্রীউলার ৪ গ্রাম প্লাবিত

সমীর রায় ও মাসুদ রানা: আশাশুনির খোলপেটুয়া নদীর জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধ ভেঙে চার গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ভেসে গেছে অসংখ্য মাছের ঘের, ঘরবাড়িসহ একাধিক স্কুল। অন্তত ২০টি পরিবার গৃহ ছেড়ে মালামাল পানি নিয়ে উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। পানিবন্দি হয়ে রয়েছে শতাধিক পরিবার। প্লাবনের আশংকায় উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে দিন পার করছে ভাঙনকবলিত বাঁধের পার্শ্ববর্তী আট গ্রামের মানুষ। স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে চলছে বাঁধ সংস্কারের কাজ।
রবিবার (১২ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় শ্রীউলা ইউনিয়নের থানাঘাটা গ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৪নং পোল্ডারের পাঁড়–ইপাড়ার জনৈক জামাল সরদারের ঘের সংলগ্ন ৫০ হাত বেড়িবাঁধ অস্বাভাবিক জোয়ারে ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এসময় জোয়ারের পানি তীব্র বেগে লোকালয়ে ঢুকে থানাঘাটা, বিলবকচর, ঢালীরচক ও পুইজালা গ্রাম প্লাবিত হয়। বর্তমানে এসব গ্রামের শতশত পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে শতশত মৎস্যঘের, কাঁচা-পাকা ঘরবাড়ি, পুকুর, বিলবকচর প্রাইমারি স্কুল, ঢালীরচক ঠাকুরবাড়ি স্কুল ও বকচর সাইক্লোন সেল্টারসহ বেশকিছু মসজিদ-মন্দির।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা সাকিল জানান, সংশ্লিষ্ট এলাকার জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধটির সাড়ে ৩ চেইন রাস্তা মেরামতের জন্য কয়েকদিন আগে ৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ঠিকাদার আব্দুস সালাম কাজটি পাওয়ার পর কাজ শুরু করার তোড়জোড় শুরু করেন। কিন্তু ভেতরে পানি থাকায় এবং মাটি না পাওয়ায় কাজ শুরু করতে পারেননি। জরাজীর্ণ বাঁধটি টিকিয়ে রাখতে বাধ্য হয়ে শনিবার (১১ আগস্ট) পরিষদের পক্ষ থেকে শ্রমিক নিয়ে মেরামতের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারে রবিবার দুপুুরে বাঁধটি টিকিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি। পরে ভাটা নামলে স্থানীয়দের নিয়ে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে বাশ-খুটি ও বালির বস্তা দিয়ে বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু করা হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও আবুল হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, ডিসিএম পদ্ধতিতে আব্দুস সালাম কন্ট্রাক্টরকে কাজ করার কথা বলা হয়েছে। সেটা স্থায়ী কোন টেন্ডার নয়। কিন্তু স্থানীয় ঘের মালিক জামাল সরদার তার ঘের থেকে মাটি কাটতে দেননি। সর্র্বশেষ রবিবার (১২ আগস্ট) তিনি ঘেরের পানি শুকিয়ে দিবেন বলে জানান। তার মধ্যেই ভেঙে যায়। বাঁধ মেরামতের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ৪ হাজার প্লাস্টিক বস্তা দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাফ্ফারা তাসনীন জানান, ডিসিএম পদ্ধতি কিনা আমি জানি না। তবে এটুকু জানি সেখানে টেন্ডার হয়েছে এবং কাজ হওয়ার কথা ছিল। বাঁধটি মেরামত করতে আপাতত ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ইউপি চেয়ারম্যান লোকজন নিয়ে কাজ করছেন। আমরা সার্বক্ষণিক পরিস্থিতির তদারকি করছি। বাঁধটি মেরামত করতে সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ জানতে আমাদের লোকজন কাজ করছে। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, রাতের জোয়ারে বাঁধ মেরামত না করা হলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হবে। সেই সাথে বাড়বে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ। কাঁচা ঘরবাড়ি ভেঙে গৃহহারা হবে অনেক পরিবার।
এদিকে, রাত ১০টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জেনারেটরের আলোয় বাঁধ সংস্কারের কাজ চলছিলো।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version