Site icon suprovatsatkhira.com

কেশবপুরে মা ও শিশু স্বাস্থ্য সেবায় ধ্বস

শেখ শাহীন, কেশবপুব: চরম অবহেলা, উদাসীনতা, বদলী ও ছুটিজনিত কারণে কেশবপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মেডিকেল অফিসার (মা ও শিশু স্বাস্থ্য) না থাকায় মা ও শিশু স্বাস্থ্য সেবায় ধ্বস নেমেছে। ডাক্তার আব্দুল বারীর বদলী ও ডা. তামান্না পারভীনের ছুটির কারণে সংশ্লিষ্ট বিভাগের মেডিকেল অফিসারের কক্ষ গত ২০ দিন ধরে তালাবদ্ধ রয়েছে। এ কারণে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা সেবা না পেয়ে চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
এদিকে, বদলী ঠেকাতে ডা. আব্দুল বারী ঊধ্বর্তন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করতে দেন দরবার চালাচ্ছে বলে জানা গেছে। ডা. আব্দুল বারী স্বপদে বহাল থাকতে তাঁর অধীনস্থ কর্মচারীদের বাধ্য করছেন তার পক্ষে ঊধ্বর্তন মহলে আবেদন করাতে।
জানা গেছে, কেশবপুর উপজেলার ১৪৪টি গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী মনিরামপুর, কলারোয়া ও তালা উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মা ও শিশুরা প্রতিনিয়ত পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সেবা গ্রহণ করতে আসেন। কিন্তু মেডিকেল অফিসারের কক্ষ তালাবদ্ধ থাকায় তারা সেবা না পেয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।
এর আগে ডাক্তার আব্দুল বারী নিয়মিত অফিস না করে বিভিন্ন ক্লিনিকে অপারেশন করাসহ নারী কেলেঙ্কারীতে জড়িয়ে পড়লেও সে যাত্রায় ঊর্ধ্বতন কর্তাদের ম্যানেজ করে পার পেয়ে যান। ফলে তিনি ৭ বছর ধরে এ উপজেলায় পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মেডিকেল অফিসার (মা ও শিশু স্বাস্থ্য) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার সত্তে¡ পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মচারীরা জানান, এই বিভাগের মেডিকেল অফিসার (মা ও শিশু স্বাস্থ্য) আব্দুল বারীর গত ২৩ জুলাই তাঁর বদলীর আদেশ হওয়ায় তিনি দেড় মাসের জন্য ছুটির আবেদন করে ১১ আগস্ট পর্যন্ত তার দপ্তরে অনুপস্থিত রয়েছেন। এ সুযোগে তিনি স্বপদে বহাল থাকতে অধীনস্থ কর্মচারীদের বাধ্য করছেন তার পক্ষে ঊর্ধ্বতন মহলে আবেদন করাতে। ছুটি নিয়ে তিনি প্রতিদিন কেশবপুরের বিভিন্ন ক্লিনিকে সিজারসহ অন্যান্য অপারেশন করে চলেছেন।
অপরদিকে, অপর মেডিকেল অফিসার (মা ও শিশু স্বাস্থ্য) ডা. তামান্না পারভীন কেশবপুর পরিবার পরিকল্পনা অফিসে দেড় বছর আগে যোগদান করলেও তিনি কখনও অফিস করেন না। ছুটি নিয়েই কাটিয়ে দিয়েছেন প্রায় এক বছর। এরপরও তিনি গত ১০ জুলাই থেকে পুনরায় ৩১ দিনের ছুটি কাটাচ্ছেন। এ কারণে ওই ডাক্তারদ্বয়ের কক্ষটি তালাবদ্ধ রয়েছে।
এ ব্যাপারে ডাক্তার আব্দুল বারী বদলীর আদেশ ও দেড় মাসের ছুটির কথা স্বীকার করে সাংবাদিকদের জানান, আমি এখনও কেশবপুর থেকে ছাড়পত্র নেয়নি এবং উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার বিশ্বাসের অনুরোধে স্থায়ী ও দীর্ঘ মেয়াদি পদ্ধতি গ্রহণ ক্যাম্পে কাজ করেছি।
কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শেখ আবু শাহিন বলেন, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের আলাদা কোন জায়গা না থাকায় পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কয়েকটি রুম নিয়ে তাদের সকল কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। তবে ডাক্তার আব্দুল বারীর কক্ষটি বেশ কয়েক দিন বন্ধ রয়েছে।
এ ব্যাপারে যশোর জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক ডাক্তার মুন্সি মনোয়ার হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মেডিকেল অফিসার ডাক্তার আব্দুল বারীর বদলীর আদেশের পর তিনি দেড় মাসের ছুটির আবেদন করেছেন। যা উধ্বর্তন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version