Site icon suprovatsatkhira.com

উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে স্বীকৃতি অর্জনে ওয়ার্ল্ড ভিশনের ভূমিকা স্মরণীয়: শাহ আব্দুল সাদী

ডেস্ক রিপোর্ট: ১৯৭৯ থেকে ২০১৮। দীর্ঘ পথপরিক্রমা শেষে সাঙ্গ হলো ওয়ার্ল্ড ভিশন কর্মযজ্ঞের। টানা ২৯ বছরের এই কর্মযজ্ঞ সাতক্ষীরার মানুষকে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নিতে সাহায্য করেছে। একটি সমাজকে আলোকিত করে তুলবার কাজে তারা হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। পথচলায় অবশেষে ক্লান্তি নেমে আসায় এখন বিরামে বিশ্রামে সাতক্ষীরা ওয়ার্লড ভিশন। তবে সংস্থাটির কার্যক্রম দেবহাটা কলারোয়া ও আশাশুনিতে চলবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা মিলনায়তনে ওয়ার্ল্ড ভিশন সাতক্ষীরা এডিপির সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তারা সংস্থাটির কর্মযজ্ঞের প্রশংসা করে বলেছেন, আমরা ওয়ার্ল্ড ভিশনের কাছে ঋণী। কারণ সংস্থাটি সরকারের সকল উন্নয়নের সাথে শরিক হয়ে আমাদের আর্থ সামাজিক এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আট হাজার মাইল দূরের অস্ট্রেলিয়া থেকে এসে বাংলাদেশের এই দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলায় উন্নয়ন কাজে অংশ নিয়ে ওয়ার্ল্ড ভিশন সন্তুষ্টি লাভ করেছে জানিয়ে এর কর্মকর্তারা আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ খুব ভালো। তারা খুব কো-অপারেটিভ।
সদর উপজেলা মিলনায়তনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তহমিনা খাতুনের সভাপতিত্বে ‘ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ অনুষ্ঠান’ শীর্ষক সুধি সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন সাতক্ষীরার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক শাহ আবদুল সাদী। এতে আরও বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ল্ড ভিশনের সিনিয়র অপারেশন ডিরেক্টর জন ডি বারমেন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান বাবু, পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতি, ওয়ার্ল্ড ভিশন রিজিওন্যাল ফিল্ড ডিরেক্টর বুলি হাগিদক, এডিপি ম্যানেজার ফুলি সরকার প্রমুখ।
‘আগুনের পরশমনি ছোঁয়াও প্রাণে’ রবীন্দ্রনাথের এই গীতি নৃত্যের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে ওয়ার্ল্ড ভিশনের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, সংস্থাটি সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় ৪৭ হাজার ৩৮৯ জন শিশু এবং এক লাখ আট হাজার ৬৫৯ জন হতদরিদ্র মানুষের দোরগোড়ায় নানা সেবা পৌঁছে দিয়েছে। এ এলাকার জনগোষ্ঠীর আর্থ সামাজিক জীবন ও জীবিকার মানোন্নয়ন, মা ও শিশু স্বাস্থ্যের উন্নয়ন, মানসম্মত শিক্ষা ও শিক্ষায় প্রবেশাধিকার, শিশুর সুরক্ষা, দরিদ্র জনগণের জন্য অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি, দারিদ্র্য বিমোচন, নারী ও শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ানো ছাড়াও জলবায়ু অভিযোজন বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করে কাজ করেছে। এছাড়া সহ¯্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও অবদান রেখেছে ওয়ার্ল্ড ভিশন। বাল্য বিবাহরোধ, বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন, লবণ সহিষ্ণু ধান উৎপাদন, গবাদি পশু পালন, বৃক্ষ রোপণ, সুপেয় পানি সরবরাহ, মানুষকে সঞ্চয় শেখানো, রাস্তাঘাট উন্নয়ন, নারীর প্রতি সহিংসতারোধ, শিশুর পুষ্টিসহ নানা বিষয়ে ওয়ার্ল্ড ভিশন ২৯ বছর ধরে কাজ করেছে। তারা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে কাজ করেছে। আইলা সিডর জলোচ্ছ্বাস ও জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তারা তাদের সহায়তা দিয়েছে।
প্রধান অতিথি শাহ আব্দুল সাদী বলেন, আমরা এখন উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছি। এই অর্জনে ওয়ার্ল্ড ভিশনের ভূমিকা রয়েছে। তারা অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমাদের সহায়তা করেছে।
জন ডি বারমেন বলেন, আমরা ভাগ্যবান আপনাদের সাথে উন্নয়ন কাজে অংশ নিয়ে। বুলি হাগিদক বলেন, আমরা জনগণের সব চাহিদা পূরণ করতে পারিনি।
সাতক্ষীরা পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ চিশতি বলেন, ওয়ার্ল্ড ভিশন চলে গেলেও তাদের উন্নয়ন ধারা আমরা অব্যাহত রাখবো।
অনুষ্ঠানের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার তহমিনা খাতুন বলেন, ‘থ্যাংকস এ লট টু ওয়ার্ল্ড ভিশন। বিকজ দে ডিড এ লট ফর আওয়ার প্রেজেন্ট অ্যান্ড ফিউচার জেনারেশন’। সুধি সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক, এনজিও কর্মকর্তা, শিক্ষক, জনপ্রতিনিধি, শিশু ফোরাম সদস্যরা, উপকারভোগী নারী ও পুরুষ। মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় ওয়ার্ল্ড ভিশনের ধন্যবাদ প্রকাশ অনুষ্ঠান।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version