গাজী আসাদ ও ফাহাদ হোসেন: সাতক্ষীরা পৌরসভার শহরের ইটাগাছা থেকে সদর উপজেলার ঘোনা সড়কটি দীর্ঘদিনেও সংস্কার না হওয়ায় বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে। বড় বড় গর্তে ১২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এ সড়কটি খানাখন্দে ভরে গেছে। সামান্য বৃষ্টিতেই চলাচলের অযোগ্য পড়ে সড়কটি। বৃষ্টিতে সড়কের গর্তগুলো পরিণত হয় মরণ ফাঁদে। বিশেষ করে সড়কটির সাতক্ষীরা পৌরসভার অংশ একেবারেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী পৌর এলাকাসহ কয়েক ইউনিয়নের কয়েক লক্ষাধিক মানুষ। এছাড়া সাতক্ষীরা অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র মোজাফ্ফর গার্ডেনে যেতেও ভোগান্তির শিকার হচ্ছে হাজার হাজার দর্শনার্থী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ইটাগাছা ওয়াপদা মোড় থেকে ঘোনা পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার সড়কের পিচ-খোয়া উঠে গিয়ে নাজুক অবস্থা। সড়কটির অধিকাংশ বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্ত এক থেকে দেড়-দু’ফুট গভীর হওয়ায় যানবহনসহ পথচারীরা প্রতিনিয়ত পতিত হচ্ছে দুর্ঘটনায়। সড়কের ইটাগাছা ওয়াপদা মোড় হতে পৌরসভার অংশটুকুর অবস্তা বেশি খারাপ। এই অংশের কোথাও পিচের চিহ্ন নেই। এর মধ্যে বনলতা হাউজিং, রইচপুর তিন মাথা মোড়, মোজাফফর গার্ডেন, খড়িরবিল মসজিদ এলাকায় সড়কটির একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে গেছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ জায়গায় সড়কটি ভেঙে রাস্তার পাশের ঘেরের মধ্যে চলে গেছে। এছাড়া শিবপুর ইউনিয়নের খানপুর এলকায়ও একই অবস্থা। সড়কটির পিচ উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে রাস্তা দিয়ে কোন ধরণের যানবাহন স্বাভাবিকভাবে চলতে পারছে না। বর্ষার সময় সড়কের গর্তগুলো পানিতে ডুবে পুকুরে পরিণত হয়।
এই সড়ক পৌর এলাকার ইটাগাছা, খড়িরবিল, রইচপুর, সাতক্ষীরা অন্যতম বৃহৎ বিনোদন কেন্দ্র মোজাফফর গার্ডেন এবং খানপুর, আলিপুর, মাহমুদপুর, বাদামতলা, ঘোনা, আগড়দাঁড়ি, আবাদেরহাট, বৈকারি, কাথÐা, পরানদহসহ কয়েকটি ইউনিয়নের ৩০-৩৫টি গ্রামের মানুষের চলাচলের অন্যতম মাধ্যম। এই সড়কটি দিয়েই প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ শহরে বিভিন্ন প্রয়োজনে আসা-যাওয়া করে। তাছাড়া সাতক্ষীরা অন্যতম বৃহৎ বিনোদন কেন্দ্র মোজাফ্ফর গার্ডেনে যাওয়ার একমাত্র সড়ক এটি। কিন্তু সড়কটি চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ায় বিনোদন কেন্দ্র যেতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষকে।
অটোচালক শাহাদাত হোসেন জানান, ইটাগাছা থেকে ঘোনা সড়কটি চলাচল করার অযোগ্য। এই সড়ক দিয়ে মানুষ চলতে পারে না। সড়কটি এতো খারাপ যে গাড়ি চালাতে খুব কষ্ট হয়। এই রাস্তা দিয়ে যানবাহন তো দূরের কথা গরুর গাড়িও চলবে না। আমাদের খুব ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে। বর্ষার সময় গাড়ি উল্টে যায়। এই রাস্তা দিয়ে কেই চলাচল করতে চায় না। মানুষ প্রয়োজনে বাদামতলা-মাহমুদপুর ঘুরে আসে। এতে যেমন সময় নষ্ট হচ্ছে, তেমনি খরচও বেশী হচ্ছে।
রইচপুর গ্রামের শামসুর রহমান জানান, এটা কোন রাস্তা না। এর থেকে বিলের মধ্য দিয়ে চলাচল করা ভালো। দীর্ঘ দিন রাস্তাটি সংস্কার করা হয় না। রাস্তার মাঝে বড় বড় গর্ত হয়েছে। প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে। তারপর আবার রাস্তার গা ঘেঁষে ঘের করায় রাস্তা ভেঙে ঘেরের মধ্যে চলে গেছে। প্রায় মানুষ ঘেরের মধ্যে পড়ে যায়। এটা সংস্কার করা খুব জরুরি।
ঘোনা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ফজলুর রহমান জানান, সড়কটি খারাপ আমরা জানি। বিশেষ করে এই সড়কের পৌরসভার অংশটি বেশী খারাপ। কিন্তু কিছু করার নাই। এটা এলজিইডি’র আওতায়। আমি অনেক বার এলজিইডিতে অভিযোগ করেছি। কিন্তু কোন কাজ হয়। তারা গুরুত্ব দেন না। জনগণের প্রয়োজনে এটা দ্রæত সংস্কার করা দরকার।
এ ব্যাপারে পৌর মেয়র মো. তাজকিন আহমেদের সাথে তার ব্যবহৃত ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এলজিইডির সদর উপজেলা প্রকৌশলী মো. শফিউল আলম জানান, সড়কটির জন্য ইস্টিমেট করে ঢাকায় পাঠনো হয়েছে। পাশও হয়েছে। খুব দ্রæত টেন্ডার করে কাজ শুরু করা হবে।
ইটাগাছা-ঘোনা সড়কের বেহাল দশা, দেখার কেউ নেই
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/