জুলাই ২৯, ২০১৮
রবীন্দ্র সংগীত : কথা ও সুরের যুগলবন্দী
প্রফেসর আব্দুল হামিদ অত্যাধুনিক ব্যান্ড-সংগীতের তাণ্ডবে একদা বহু জনপ্রিয় বাংলাগানের সলিল সমাধি ঘটলেও রবীন্দ্র-সংগীতের জনপ্রিয়তা ক্রমবর্ধমান রয়ে গেছে। এ এক আশ্চর্য ঘটনা বটে। তবে এরও একটা যুক্তিসঙ্গত কারণ আছে। কারণটি হৃদয়ের আর্তি-সংক্রান্ত। গীতিকবি রবীন্দ্রনাথ তাঁর রচিত ও সুরারোপিত অজস্র গানে কথা ও সুরের যুগলবন্দী ঘটিয়েছেন যা আধুনিক স্রোতার মনে এবং প্রাণে যুগপৎ আবেদন সৃষ্টি করে ও তাকে সম্মোহিত করে। রবীন্দ্রনাথের ভাষা আধুনিক এবং তাঁর গানের প্রারম্ভিক চরণ অত্যন্ত আকর্ষণীয়। প্রথম চরণেই তিনি শ্রোতার মনোযোগ আকর্ষণ করেন। তার গানের জনপ্রিয়তার এটা একটা গৌণ কারণ। কিন্তু প্রথম আকর্ষণ হিসেবে এরও একটা গুরুত্ব আছে। এমন অনেক প্রারম্ভিক চরণ আছে যাতে মূল ভাবটিকে সামনে আনা হয়েছে। যেমন- বৈষ্ণব পদাবলী ধারার একটি বিখ্যাত গান : ‘‘ওহে জীবনবল্লভ/ওহে সাধন দুর্লভ।’’ ¯্রষ্টার কাছে পরিপূর্ণ আত্মনিবেদনের বাসনা ব্যক্ত হয়েছে গানটিতে। বৈষ্ণব কবিতা মানবাত্মারূপী শ্রীরাধিকার শ্রীকৃষ্ণরূপ পরমাত্মায় আত্মনিবেদনের আর্তিতে ভাস্বর। আমাদের আলোচ্য রবীন্দ্র-সংগীতটিতেও ¯্রষ্টার কাছে আত্মনিবেদনের আকুতি ব্যক্ত হয়েছে ঐ একই স্টাইলে। গানটিতে পদাবলীর সুর অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে, যেমন- ‘‘দিনু চরণতলে/কথা যা ছিল দিনু চরণতলে/প্রাণের বোঝা বুঝে লও দিনু চরণতলে/শুধু জীবন মন চরণে দিনু বুঝিয়া লহ সব/আমি কী আর কব……..। রবীন্দ্রনাথের ব্যক্তিগত জীবন ছিল প্রিয়জনের মৃত্যুজনিত বিরহ শোকে জর্জরিত। এই বিয়োগ যন্ত্রণা তিনি সহ্য করে গেছেন অসীম ধৈর্যের সাথে। নিজের দুঃখ বেদনার কথা তিনি কখনও প্রকাশ করতেন না। অন্তর্বেদনা গোপন করার বাসনাও ব্যক্ত হয়েছে আমাদের আলোচ্য এই গানটিতে: 8,552,187 total views, 2,793 views today |
|
|
|