শেখ শাহীন, কেশবপুব: কেশবপুরে মহাকবি মাইকেল মধুুসূদন দত্তের জন্মস্থান সাগরদাঁড়ির মধুপল্লীর চার দেয়ালের ভেতরে বন্দি হয়ে পড়েছে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা। নেই খেলার মাঠ। নেই সমাবেশের পর্যাপ্ত স্থান। এক প্রকার বন্দিভাবে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে সাগরদাঁড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখে গেছে, মধুপল্লীর ভেতর অবস্থিত সাগরদাঁড়ি সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস শুরুর পূর্বে সমাবেশ করানো হচ্ছে গাছের ভেতরে খোলা জায়গায়। স্কুলের শিক্ষার্থীদের স্বাধীনভাবে চলাচলের সুযোগ নেই। স্কুলটির জন্য নেই কোন খেলার মাঠ। মধুপল্লীর ভেতরে এক প্রকার বন্দি হয়ে শিক্ষা গ্রহণ করছে শিক্ষার্থীরা। একতলা বিশিষ্ট ভবনে চলছে ক্লাস। স্কুলটিতে শিক্ষা গ্রহণ করছে ২শ’৮৮ জন শিক্ষার্থী। কিন্তু এতো জন্য শ্রেণি কক্ষ রয়েছে মাত্র চারটি। প্রয়োজন থাকলেও শ্রেণিকক্ষ বাড়ানোর সুযোগ নেই কর্তৃপক্ষের। স্কুল শুরুর সময় মধুপল্লীর গেট খুলে দেওয়া হয় আবার শেষ হওয়া মাত্রই বন্ধ করে দেওয়া হয়। স্কুল সময়ের বাইরে স্কুল ক্যাম্পাসে খেলার সুযোগ নেই তাদের। এছাড়া পিকনিক মৌসুমসহ প্রায়ই পর্যটকদের ভিড় থাকায় শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে চলতে পারে না।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান জানায়, খেলার মাঠ নেই তাই খেলাধূলা করা যায় না। বল নিয়ে খেলতে গেলে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। স্কুল শুরুর আগে বা শেষ হওয়ার পরে খেলতে পারি না। আমরা এর মধ্যে বন্দি হয়ে আছি।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মেহেরুন নেছা বলেন, স্কুলটিতে শিক্ষার্থী রয়েছে ২শ’৮৮ জন। এতোজন শিক্ষার্থীর সমাবেশ এক সাথে করানোর জায়গা নেই। শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাস ব্যবহারে স্বাধীনতা নেই। আবার পিকনিক মৌসুমে ক্লাস নিতে খুব কষ্ট হয়। স্কুলটি মধুপল্লীর বাইরে স্থানান্তর করার জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করা হয়েছে।
সাগরদাঁড়ির মধুসূদন একাডেমির পরিচালক খসরু পারভেজ বলেন, শিক্ষার্থীদের মন বিকাশে দ্রুত স্কুলটি মধুপল্লীর বাইরে স্থানান্তর করা দরকার।
মধুপল্লীতে নিয়োজিত প্রতœতত্ত্ব বিভাগের কাস্টডিয়ান মহিদুল ইসলাম বলেন, স্কুলের শিশুদের জন্য মধুপল্লীর গেট স্কুল চলা পর্যন্ত খুলে রাখা হয়। তারপরও স্কুলটি মধুপল্লীর বাইরে নেয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
স্কুলের সভাপতি সুভাষ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, স্কুলটির জন্য সাগরদাঁড়ি বাজারের পাশেই একটি জায়গার কথা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। দ্রুত স্কুলটি মধুপল্লীর বাইরে স্থানান্তর করতে পারলে শিক্ষার্থীদের জন্য ভাল হবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আকবর হোসেন বলেন, বিদ্যালয়টি মধুপল্লীর বাইরে নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বহী অফিসার মো. মিজানূর রহমান বলেন, ওই স্কুলটি মধুপল্লীর বাইরে স্থাপন করার জন্য তিন বিঘা জমি অধিগ্রহণের কাজ চলমান আছে। অধিগ্রহণ শেষে স্কুলটি মধুপল্লীর বাইরে স্থানান্তর করা হবে।
মধুপল্লীর চার দেয়ালে বন্দি সাগরদাঁড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা, নানা সংকট
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/