জুলাই ২৯, ২০১৮
পাগলা কানু অবশেষে পাগল হয়ে গেলো
মনিরুজ্জামান ছট্টু আমাদের গ্রামে কবি আসবেন। একজন কবি না, অনেক কবি। আমাদের গ্রামের দক্ষিণ দিকে যেখান দিয়ে ক্ষীণ ধারায় বয়ে চলেছে কপোতাক্ষ, যাকে আমরা এখন মরা কপোতাক্ষ বলি-তার তীরে যে বড় বট গাছটা, তার তলায় নাকি কবিদের মিলন মেলা হবে। ভাসা ভাসা এমন কথা এখন গ্রামে বেশ আলোচনা হচ্ছে। এমন আলোচনায় আমাদের তেমন কোনো আগ্রহ না থাকলেও একজনের আগ্রহের কিন্তু মোটেই কমতি ছিল না। সে হলো আমাদের পাগলা কানু। বটতলায় কবিদের মিলন মেলা হবে। মিলন মেলা জিনিসটা যে আসলে কী রকম সে সম্পর্কে পাগলা কানুর কোন স্পষ্ট ধারণা নেই। কারা এর আয়োজন করছে, কারা এসব কবিদের আমাদের এই অজগাঁয়ে নিয়ে আসছেন, তার কোন কিছুই পাগলা কানু জানে না। সে শুধু শুনেছে, আমাদের গ্রামে কবি আসবেন। একজন কবি না, অনেক কবি। বইয়ের পাতায় ছাপার অক্ষরে যেসব কবিদের কবিতা ছাপা হয়, যাদের নাম ছাপা হয়, সে রকম সত্যিকারের কবি। পাগলা কানু নিজেও একজন কবি। আমাদের এই মরা কপোতাক্ষ তীরের কাঁটাখালি গ্রামের সবাই তাকে চিনি পাগলা কবি হিসাবে। কিন্তু তার কবিতা কখনো বইয়ের পাতায় ছাপা হয় না। সে তো আর লেখাপড়া জানে না। তাই সে লিখতেও পারে না। তবে মুখে মুখে সে অসম্ভব সুন্দর সুন্দর কবিতা বানাতে পারে। আমরা তার কবিতা শুনে মুগ্ধ। তবে এই যে কবিতা বানানো, এ কিন্তু সবসময়ের জন্য না। বছরের প্রায় অর্ধেক সময় তার মাথা খারাপ থাকে। বিশেষ করে গরমের সময়। শীতকালে একটু ভালো থাকে। মজার ব্যাপার হচ্ছে সে যখন ভালো থাকে তখন সে একটাও কবিতা বানাতে পারে না। চৈত্র-বৈশাখ মাসে যখন গণগনে সূর্য আগুনের ফুলকি ছড়ায় চরাচরময়, তখন তার কাব্য প্রতিভার উন্মেষ ঘটে। 8,552,201 total views, 2,807 views today |
|
|
|