জি এম মোস্তাক আহমেদ, কপিলমুনি: তিন দিনের অবিরাম বৃষ্টিতে কপিলমুনি, হরিঢালী, উলুডাঙ্গা, রহিমপুর, সোনাতনকাটি, মামুদকাটি, সলুয়া, প্রতাপকাটি, কাজিমুছা, কাশিমনগর ও রামনগরসহ বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলের ক্ষেত, বীজতলা, পানের বরজ ও নার্সারি তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া তলিয়ে গেছে কয়েক গ্রামের বসতবাড়ি, রাস্তা-ঘাট, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। বাজার উন্নয়নের কাজ অব্যাহত থাকায় পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে বলে এলাকাবাসীর দাবি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তিন দিনের অবিরাম বৃষ্টিতে পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় কপিলমুনির দক্ষিণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বাজার অভ্যন্তরে অবস্থিত ধান্য চত্বর, পাইকারী কাঁচামাল, পান হাটা, খুচরা কাঁচামাল পট্টি, মাছ পট্টি, মুরগী হাটা, ঐতিহ্যবাহী চা-পট্টি, মিল কলকারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, আবাসিক এলাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার রাস্তা কাঁদা-মাটি, ময়লা আবর্জনা ও পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে এলাকাবাসী।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কপিলমুনির পার্শ্ববর্তী এলাকাসমূহ হরিঢালী, উলুডাঙ্গা, রহিমপুর, সোনাতনকাটি, মামুদকাটি, সলুয়া, প্রতাপকাটি, কাজিমুছা, কাশিমনগরসহ আশপাশের নি¤œাঞ্চলে বৃষ্টির পানি নিষ্কাশিত না হওয়ায় স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে বিস্তীর্ণ এলাকার শত-শত রোপা আমন তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে মৎস্য ঘের ও বসত বাড়ি। এর মধ্যে অনেক এলাকার রাস্তা-ঘাট পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় সেগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলার হরিদাশকাটি এলাকার উত্তম হোড় বলেন, রাতে ও দিনে অবিরাম বৃষ্টির কারণে আমাদের এলাকায় অনেক চিংড়ি ঘের, বীজতলা, পুকুর, পানের বরজ এমনকি রাস্তা-ঘাট বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। ড্রেন ও রাস্তার কোন সু-ব্যবস্থা না থাকায় স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি থেমে গেলেও সম্পূর্ণ এলাকার পানি নিষ্কাশিত হতে দুই থেকে চার দিন সময় লাগতে পারে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে পানের বরজ। অনেক বরজে পচন দেখা দিয়েছে। আমার একমাত্র উপার্জনের শেষ সম্বল পানের বরজটুকুও যদি শেষ হয়ে যায় তাহলে জীবনে বেঁচে থাকা কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়বে।
কপিলমুনির নোয়াকাটি এলাকার কৃষক রহিম গাজী জানান, বৃষ্টিতে কৃষকের যেমন আমন ধান চাষে সুবিধা হয়েছে। তেমনি অতি বৃষ্টির কারণে চিংড়ি অধ্যুষিত এলাকা খ্যাত পাইকগাছা উপজেলার শত-শত চিংড়ি ঘের পানিতে তলিয়ে গিয়ে হাজার-হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। যা বর্তমান সময়ে অপূরণীয়। পাশাপাশি নিকটস্থ এলাকায় অবস্থিত ধানক্ষেত ও বীজতলা তলিয়ে রোপা আমনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে এলাকাবাসী মনে করছেন দু-একদিনের মধ্যে কপিলমুনি বাজারসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাসূমহে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে।
কপিলমুনিতে তিন দিনের বৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/