Site icon suprovatsatkhira.com

সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও কপিলমুনিতে গড়ে ওঠেনি শিল্প কারখানা, বাড়ছে বেকারত্ব!

 

 

জিএম মোস্তাক আহমেদ, কপিলমুনি: পর্যাপ্ত জনশক্তি, শিল্প সম্ভাবনাময় ভৌগলিক অবস্থান ও উপযুক্ত পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও দক্ষিণ খুলনার উপকূলীয় উপজেলা পাইকগাছার কপিলমুনিতে শিল্পের প্রসার ঘটেনি। এজন্য বছরে চার-পাঁচ মাস কর্মহীন জীবনযাপন করতে হয় এই জনপদের লক্ষাধিক মানুষকে। এক সময় বছরে দুই-তিনটি ফসল উৎপাদন করে প্রান্তিক চাষীরা জীবন কাটাতো। কিন্তু চিংড়ি চাষের মাধ্যমে জমিতে লোনা পানির ব্যবহার বেড়েছে। এতে জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হয়ে ফসল উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। ফলে ঐ সমস্ত কৃষক বেকার হয়ে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। তাই এখন জীবন ধারণের জন্য শহরমুখী হচ্ছে মানুষ। অথচ এখানে চিংড়ি সহায়ক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠার মত পরিবেশ থাকলেও তা গড়ে উঠেনি।
এছাড়া রয়েছে সুন্দরবনের অফুরন্ত প্রাকৃতিক সম্পদের ভা-ার। এর উপর ভিত্তি করে এলাকায় বিভিন্ন শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। কিন্তু উদ্যোগের অভাব, কর্মবিমুখতা, ব্যক্তি কেন্দ্রিক আয় নির্ভরশীল চিন্তাসহ রাজনৈতিক চেতনা বোধের অভাব এবং অদূরদর্শীতাই শিল্পায়নে প্রধান অন্তরায় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তবে রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে পাইকগাছা ইতোমধ্যে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছে। অথচ শিল্প উন্নয়ন, সরকারি অথবা বেসরকারি উদ্যোগে তেমন কোন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়নি। এ অঞ্চলে জনস্বার্থের চেয়ে ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলে জনপ্রতিনিধিরা কাজ করেন বলে স্থানীয় জনগণের অভিযোগ।
পাইকগাছা উপজেলায় ৮০ ভাগ কৃষক, শ্রমিক, মৎস্যজীবী ও দিনমুজুর বাস করে। তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্য বহুলাংশে ফসলের পরিবর্তে চিংড়ি চাষের উপর নির্ভরশীল থাকতে হয়। চিংড়ি মৌসুম শেষ হলেই চাষীরা কর্মহীন হয়ে পড়ে। অপরদিকে কপোতাক্ষ নদী তার যৌবন হারানোর ফলে এলাকার অনেক মানুষ দারিদ্র্য সীমার নীচে বাস করছে।
এদিকে হঠাৎ প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে সব শ্রেণির মানুষ দুর্ভোগে পড়ে। তখন বেঁচে থাকার তাগিদে মানুষ নিজ এলাকা ছেড়ে শহরমুখী হয়ে পড়ে। বর্তমানে চিংড়ি চাষে বিপর্যয় দেখা দেওয়ার কারণে চাষীদের নাভিশ্বাস ঘটছে।
এতে এলাকায় বেকারের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি কর্মবিমুখতার কারণে শিক্ষার প্রতি অহীহা অনেকাংশে বেড়ে গেছে।
চিংড়ি সহায়ক শিল্প প্রতিষ্ঠান ও সুন্দরবনের উপর ভিত্তি করে বড়, মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে পারে এ অঞ্চলে। এতে এলাকার যেমন উন্নতি ঘটবে, তেমনি বেকার সমস্যার সমাধানও হবে। অন্যদিকে সরকারি রাজস্ব বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কপিলমুনি সহচরী বিদ্যামন্দির স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হরেকৃষ্ণ দাশ বলেন, কপিলমুনিসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় যদি কোন বড় মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতো তাহলে আমাদের এলাকার বেকার সমস্যা কিছুটা হলেও সমাধান হত। অন্য জেলার উন্নয়নের তুলনায় আমরা খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলাসহ কপিলমুনি এলাকার অবকাঠামোগত উন্নয়নের দিক থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছি। তবে বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতার মধ্যে দিয়ে একটু পরে হলেও পাইকগাছা উপজেলাসহ অত্র অঞ্চল জুড়ে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে বলে আমরা আশা করছি।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version