Site icon suprovatsatkhira.com

চুকনগরে হাজার হাজার মৎস্য ঘের তলিয়ে যাওয়ার আশংকা, কুলবাড়িয়া স্লুইস গেট সংস্কারের দাবি

গাজী আব্দুল কুদ্দুস (চুকনগর): চুকনগরের কুলবাড়িয়া স্লুইস গেটের কপাট নষ্ট হয়ে যাওয়ায় হাজার হাজার মৎস্য ঘের তলিয়ে যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার কাঁঠালতলা বয়ারসিং রোড়ের কুলবাড়িয়া গ্রামের ৪নং গেটটির ভেতর ও বাহির পাশের ৮টি কপাট ভেঙে দীর্ঘদিন ধরে অকেজ হয়ে পড়েছে। এতে জোয়ারের সময় পানি ভেতরে প্রবেশ করলেও ভাটার সময় পানি বের হচ্ছে না। ফলে বর্ষা মৌসুমে একদিকে বৃষ্টির পানির চাপ অপর দিকে নদীর জোয়ারের পানি চাপে এলাকার কয়েক হাজার ছোট বড় মৎস্য ঘের তলিয়ে যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। মৎস্য ঘেরের বেড়িতে লাগানো সীম, লাউ, কুমড়াসহ বিভিন্ন রকমের গাছ ও ফসল নষ্ট হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ কৃষক এখনো ধানের বীজতলা করতে পারেনি। তাই এবছর কৃষকরা বোরোর আবাদ করতে পারবে বলে মনে হয় না।
এদিকে জালাল উদ্দিন শেখ, ইকবাল হোসেন মোড়ল, তফসির মোড়ল, মোস্তফা শেখ, গনি মোড়ল, আহাদ মোড়ল, দ্বীন মোহাম্মদ গাজী, আমীন মালী, হযরত মোল্যা, বিলায়েত গাজীসহ প্রায় শতাধিক ব্যক্তি জানায় নষ্ট ও ভাঙ্গা কপাট দিয়ে প্রতিনিয়ত লোনা পানি মৎস্য ঘেরে প্রবেশ করায় হাজার হাজার মণ সাদা মাছ মরে সাবাড় হয়ে গেছে।
একাধিক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, কুলবাড়িয়ার গেটটি প্রতিবছর কতিপয় অসাধু ব্যক্তিকে দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করা হয়। এই ব্যক্তিদের কোন মৎস্য ঘের না থাকায় তারা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য ইতোপূর্বে ব্যবহার করে আসছে। এ কারণে অতি অল্প সময়ের মধ্যে গেটের কপাটগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। তাছাড়া খুটুখালি, নিচুখালি, সুড়–র বিল, শাসারডাঙ্গি, নরকুড়ি, আগারবেড়, দারার আবাদ, ঘটের আবাদ, গাজীর বিল, মোসকুড়–, মালতিয়া মাগুরাঘোনার শতাধিক বিল, গুদারডাঙ্গি, গাদরছা, ছোট চ্যাংমারী, বড় চ্যাংমারী, গেলাবদাহ, মুড়োবুনি, ৯নং বিল, আলুপদিয়া, চান্দামারিসহ কয়েক হাজার বিল নদীর জোয়ারের পানি ও বর্ষার পানি চাপে প্রায় তলিয়ে যাওয়ার মত। যদি কুলবাড়িয়া ৪নং গেটটি সংস্কার বা কপাট পরিবর্তন করা না হয় তাহলে অল্প দিনের মধ্যে হাজার হাজার মৎস্য ঘের ও বেড়িতে লাগানো লক্ষ লক্ষ টাকার ফসল, ধানের বীজতলা ও কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে যাবে। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এলাকাবাসীর দাবি অনতিবিলম্বে কুলবাড়িয়ার ৪নং স্লুইচ গেটটি সংস্কার করা হোক।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পানি কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ এবিএম শফিকুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কতিপয় অসাধু ব্যক্তি নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য বা শুধুমাত্র মাছ মারার জন্য অপরিকল্পিতভাবে ব্যবহার করে গেটটি নষ্ট করে ফেলেছে। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে আমার দাবি অল্পদিনের মধ্যে গেটটি সংস্কার করা এবং কারো স্বার্থে গেটটি ব্যবহার না করে জনকল্যাণে ব্যবহার করা হোক।
উপ-সহকারী প্রকৌশলী (এসও) মো. সোবহান হাওলাদার বলেন, এখান থেকে এক বছর আগে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অর্থাৎ যারা মূলত গেটগুলো করে থাকেন তাদেরকে কুলবাড়িয়ার গেটটি সংস্কারের জন্য জানিয়েছি এবং জুন মাসে আমরা তাদের এ্যাডভ্যান্স দিয়েছি। কিন্তু তারা সময়ের অভাবে গেটটি সংস্কারের উদ্যোগ নিচ্ছে না।
উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডি) হেলাল আহম্মেদ খান বলেন, গেটটি সংস্কারের কাজ প্রক্রিয়াধীন। অল্পদিনের মধ্যে সংস্কার করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছা. শাহানাজ বেগম বলেন, এটাতো আসলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে সংস্কার করা হয়। যদি এলাকাবাসীর দাবি থাকে তাহলে আমরা কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই জানাব।

https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/
Exit mobile version