মৌয়ালীরা ফিরে এসে জানায়, অনুকুল আবহাওয়ায় সুন্দরবনে পর্যাপ্ত মধু পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু বনদস্যু বাহিনীর মুক্তিপণ, লুটপাট ও অত্যাচারে ঠিকমত মধু আহরণ করা যাচ্ছে না। এক বাহিনীর হাত থেকে ছাড়া পেতে না পেতেই আরেক বাহিনীর আক্রমন। ফলে যে পরিমান মধু আহরণ করা যাচ্ছে তা দিতে হচ্ছে বনদস্যু বাহিনীদের। মৌয়ালরা আরও জানায়, মহাজনের কাছ থেকে চড়াসুদে ঋণ নিয়ে তারা রীতিমত দিশেহারা। অর্জিত লক্ষ্যমাত্র পূরণ না হলে ঋণের দায়ে পরিবার নিয়ে এলাকা ছাড়তে হবে। গাবুরা এলাকার মৌয়ালরা জানায়, গত ১৪ দিনে সুন্দরবনে ৪৫ কেজি মধু আহরণ করেছে। কিন্তু পুরোটাই বনদস্যু ছোটভাই বাহিনী লুট করেছে।
মৌয়ালরা আরও জানায়, মধু আহরণ মাসকে কেন্দ্র করে উপকূলীয় অঞ্চলে ভেজাল মধু তৈরী চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ওই চক্রটি অতি গোপনে রাতের আধারে সুন্দরবনের ভিতরে চিনি জ্বালিয়ে ড্রাম ভর্তি করে ভেজাল মধু লোকালয়ে এনে বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করে মানুষের ঠকাচ্ছে। মৌয়ালরা জানায়, ভেজাল মধুর সাথে মৌমাছি ও মোম মিশিয়ে খাটি মধু নামে এলাকায় সরবরাহ করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। ফলে এক দিকে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার অন্যদিকে প্রকৃত মৌয়ালরা বঞ্চিত হচ্ছে।
সার্বিক বিষয়ে বুড়িগোয়ালীনির স্টেশন কর্মকর্তা কে,এম কবির হোসেন জানায়, বন বিভাগের পক্ষথেকে মৌয়ালদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে সীমিত জনবল নিয়ে বিশাল এলাকায় সঠিকভাবে পাহারা দেওয়া কষ্টসাধ্য। প্রসংগত চলতি বছর সুন্দরবনে মধু আহরণের লক্ষমাত্রা ১ হাজার ৫০ কুইন্টাল এবং মোম ৫৬৫ কুইন্টাল। প্রতি কুইন্টাল মধু আহরণের জন্য রাজস্ব ৭৫০ টাকা এবং মোম ১ হাজার টাকা। প্রতি ১৪ দিনে একজন মৌয়াল সর্বোচ্চ ৫০ কেজি মধু আহরণ করতে পারবে।
https://www.facebook.com/dailysuprovatsatkhira/